গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন গায়ক আকবর। আজ (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এই কণ্ঠশিল্পী রাজধানীর পিজি হাসপাতালের ডি ব্লকের মেডিসিন বিভাগের ১৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন।
আকবরের স্ত্রী কানিজ ফাতিমা সীমা চ্যানেল আই অনলাইনকে খবরটি জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে চিকিৎসক এসে আকবরকে দেখেছেন।
আকবরের স্ত্রীর ভাষ্য, ডাক্তার দেখে বলেছেন আগে আকবরের কিডনির সমস্যা ছিল সেটা বেড়েছে। এখন রক্ত শূন্যতা দেখা দিয়েছে। টিবি ভাইরাস আক্রমণ করেছে। শরীরে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেজন্য কোমর থেকে দুই পা অবশ। ১২ টার মতো পরীক্ষা করা হয়েছে। আগামীকাল রিপোর্ট দেয়া হবে তখন বোঝা যাবে অসুস্থতা কতটুকু গুরুতর।
গায়ক আকবরের অসুস্থতা নিয়ে গতকাল (সোমবার) চ্যানেল আই অনলাইনে একটি খবর প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে আকবরের স্ত্রী বলেছিলেন, আকবর খেতে পারছেন না। সেজন্য তাকে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। স্যালাইন দিয়ে শরীরে খাবারের যোগান দেওয়া হচ্ছে বলে জানান আকবরের স্ত্রী সীমা।
তিনি আরও জানান, গত ১১ দিন ধরে বিছানায় পড়ে ছিলেন আকবর। ঠিকমত কথাও বলতে পারছেন না। একটু আধটু বললেও তার মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছে জড়িয়ে জড়িয়ে।
২০১৭ সালে একই সমস্যায় ভুগেছিলেন গায়ক আকবর। সেবার হানিফ সংকেত নিজ উদ্যোগে ভারতে পাঠিয়ে আকবরের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তারপর তিনি সুস্থ হয়ে টুকটাক গান করতেন। এবার আরও গুরুতর অসুস্থ হন তিনি। আকবরের স্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, একজন শিল্পী হিসেবে আকবরের জন্য তার আছে সহায়তা চাই। জীবনে অনেক পরিশ্রম করে আজকে সে অবস্থানে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী যদি তার মমতা ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন তবে আমার পরিবার অনিশ্চিত অন্ধকারের হাত থেকে রেহাত পেত।
যশোর শহরের অলিগলিতে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরেই। সেখানে টুকটাক গান করতেন। তবে গান নিয়ে ছোটবেলা থেকে হাতেখড়ি ছিল না। আকবরের ভরাট কণ্ঠের গানের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। সেবার বাগেরহাটের এক ভদ্রলোক আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন।
তারপর তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ইত্যাদির টিম আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছরই ইত্যাদিতে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে, ফিরবে না সেতো আর কারও আকাশে’- কিশোর কুমারের এ গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর। এরপর আকবরকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি গায়ক পরিচয়ে পরিচিতি পান। পরে আকবরের ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।