বাংলাদেশে এসে প্রথমবার টেস্ট ম্যাচ হেরে মুশফিকদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) কর্মকর্তারা। জনপ্রিয় ক্রিকেট লেখক গিডিওন হেই তার লেখা নতুন বই ‘ক্রোসিং দ্য লাইনে’ এমন তথ্য উল্লেখ করেছেন।
২০১৭ সালে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারায় বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের পর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার টিম পারফর্ম্যান্স প্রধান প্যাট হোবার্ড বোর্ডের কাছে একটি মেইল পাঠান। সেখানে তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া এমন একটি দলের কাছে হেরেছে, যারা প্রদেশ ভিত্তিক টুর্নামেন্টের খেলোয়াড়দের মতোও নয়!’
গিডিওন লিখেছেন, হোবার্ড তার মেইলে উল্লেখ করেন অস্ট্রেলিয়া যাদের কাছে হেরেছে তারা প্রদেশ ভিত্তিক দলে একটি রানও পাবে না।
হোবার্ডের মেইলটি ছিল এমন, ‘বাংলাদেশের কাছে হেরে আমি ঢাকার একটি হোটেলে বসে ছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে বিব্রত। যে কেউ বুঝতে পারবে এই হার কতটা নিম্নমানের। যৌক্তিকভাবে আমি নিশ্চিত যারা আমাদের এইমাত্র হারিয়েছে, তারা কোনো প্রদেশ দলের বিপক্ষে এক রানও পাবে না।’
ঢাকায় অস্ট্রেলিয়া প্রথম ম্যাচে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। চট্টগ্রামে সাত উইকেটে জয় পায় দলটি।
এই সফরে আসার আগে নানা টালবাহানা করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। ২০১৫ সালে নিরাপত্তার অজুহাতে টেস্ট খেলতে আসেনি তারা। ২০১৭তে সেই সিরিজ যখন আয়োজনের দ্বারপ্রান্তে, তখন তাদের ক্রিকেটাররা বেতন-ভাতা নিয়ে আন্দোলনে নেমে পড়েন। এই দোহাই দিয়ে এই সিরিজও বাতিল হওয়ার মুখে ছিল। তখন অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ইচ্ছে করেই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবে না দেশটি।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের ক্রীড়া সাংবাদিক ম্যালকম নক্স বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) এবং অজি ক্রিকেটারদের মনোভাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সিরিজের পেছনে ডলারের গুরুত্ব কাজ করছে।
‘সব টেস্ট ম্যাচ সমান, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা বেশি সমান। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার এবং বোর্ড যদি সমাধানে পৌঁছায় তবে সেটা হবে অ্যাশেজের কথা চিন্তা করে। ১৮ তারিখ থেকে বাংলাদেশে যে সিরিজ রয়েছে সেটা সম্ভবত পথের পাশেই রয়ে যাবে।’ লিখেছিলেন ম্যালকম।
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথম ১৩ বছরে ৭৮ টেস্টে মাত্র তিনটিতে জয় পায় বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে এই হিসাব অনেকটা পাল্টে গেছে। দীর্ঘ যাত্রায় ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় যায় বাংলাদেশ। তারা এসেছিল ২০০৬ সালে। সেই সফরেও খেলায় খুব একটা মনোযোগ ছিল না শেন ওয়ার্নদের। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ১১২ রান দিয়ে উইকেটহীন ছিলেন ওয়ার্ন। দলের ভেতর তখন এমনও বলাবলি হচ্ছিল, এর চেয়ে বাড়ি যাওয়া ভালো ছিল!