নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াত ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামী জড়িত বলে অভিযোগ করেছে হিজবুত তাওহিদ।
দুই কর্মী নিহতের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও সংগঠনটির দাবি এই হামলায় তাদের ১০ জন কর্মী মারা গেছে। আগেই প্রশাসনকে জানানো হলেও ঘটনার সময় প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছে হিজবুত তাওহিদ।
হামলার পর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব অভিযোগ জানিয়ে সংঠনটি বলেছে, “গত ২১ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছে। এ কারণে প্রথম থেকেই জঙ্গিবাদী মতবাদে বিশ্বাসী, ধর্ম নিয়ে যারা রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধি করে ও বিভিন্ন ধরণের ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে আমাদের ব্যাপারে ভুল বুঝিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ, মারধর, বাড়ি লুট, অগ্নিসংযোগ, কর্মীদের হামলা ও হত্যা করা হয়েছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, “আজ (সোমবার) নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার পোরকরা গ্রামে জামায়াত-হেফাজত এবং আরও কিছু সংগঠনের সম্মিলিত ষড়যন্ত্রে কয়েক হাজার মানুষ হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে আক্রমণ করে।শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হেযবুত তওহীদের ১০ জন কর্মীকে তারা শহীদ করেছে, শতাধিক সদস্যকে আহত করেছে, লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করেছে, ১৫ টা মটর সাইকেল জ্বালিয়েছে ও দুইটা বাড়ি জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করেছে।”
আগে থেকেই এমন ঘটনার প্রস্তুতি নেওয়া হয় উল্লেখ করে বলা হয়, “এই ঘটনা ঘটানোর অসৎ উদ্দেশ্যে গত ১১ মার্চ ১৬ খ্রি তারিখে তারা জুম’আর সময় পোরকরা গ্রামের মসজিদে মসজিদে মুসল্লীদের মাঝে নাম-ঠিকানা বিহীন ‘হেযবুত তওহীদ একটি কুফরি সংগঠন’ শিরোনামের এক উড়ো হ্যান্ডবিল বিলি করে।”
“তারপর হেযবুত তওহীদ সদস্যদের উক্ত গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য ও বে-আইনী ফতোয়া দিয়ে মুসল্লীদের উত্তেজিত করে তোলে। এর পর থেকেই জামায়াত-হেফাজতের নেতাকর্মীরা হেযবুত তওহীদের কর্মীদেরকে কাফের খ্রিষ্টান ইত্যাদি ফতোয়া দিয়ে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য জনগণকে উসকানি দিতে থাকে। এই পরিস্থিতি প্রশাসনকে কয়েকদিন ধরে বারবার অবগত করার পরও প্রশাসনের চোখের সামনে, তাদের নিষ্ক্রীয় নির্লিপ্ততার সুযোগেই তারা এমন ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়।”
বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, “২০০৯ সালেও তারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে এমনই মিথ্যা ফতোয়াবাজী করে সাধারণ মুসল্লিদের ধর্মবিশ্বাসকে ভুল খাতে প্রবাহিত করে আমাদের ৮ টি বাড়ি লুট করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে দিয়েছে, যেমন তারা দেশময় এটা করে থাকে। এর পুনরাবৃত্তি ঘটালো আজ। হেযবুত তওহীদ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে চায়।”
“কারণ বাংলাদেশে জঙ্গি আছে এই অজুহাত দেখিয়ে পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলো এদেশকেও ইরাক সিরিয়ার মতো একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের এই জঙ্গিবাদ বিরোধী কর্মকাণ্ডের যারা ঘোর বিরোধী, যারা চায় এদেশকে একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে, সেই হেফাজতিরা আমাদের বিরুদ্ধে এই তাণ্ডবে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা মানুষের ধর্মীয় চেতনাকে উসকে দেওয়ার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে কাফের, খ্রিষ্টান ইত্যাদি ফতোয়া প্রদান করেছে। এভাবে তারা তাদের যাবতীয় অপকর্মকে, গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞকে জায়েজ করে ফেলেছে। আমরা এ ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করছি”।