ড. হেলেন ফেল্টোভিক উটাহ ভ্যালি রিজিওনাল মেডিক্যাল সেন্টারের একজন ধাত্রী বিশারদ। নারী ও শিশুদের নিয়েই কাজ করতে ভালোবাসেন তিনি। তিনি মূলত নতুন এই প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন। বাংলাদেশের গর্ভবতী নারী ও শিশুদের সাহায্য করার জন্য নতুন একটি যন্ত্রও নিয়ে এসেছেন তিনি।
২০০১ সাল থেকে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, নরওয়ের সরকার, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্সেডশন, গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জ কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় কাজ করে চলেছেন হেলেন। উটাহ ভ্যালি রিজিওনাল মেডিকাল সেন্টারের মুখপাত্র জানেট ফ্রাঙ্ক বলেন, নারী ও শিশুদের জন্য কাজ করা ফেল্টোভিকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
তিনি যখন মেডিকেল সেন্টারের কাজ শুরু করেছেন, তখন থেকে নারীদের স্বাস্থ্য উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তবে শুধু হাসপাতালেই নয়, সারাবিশ্বেই তিনি কাজ করে যেতে চান।
বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনাচিন্তার কথা জানালেন হেলেন নিজেই। বলেন,‘আমি গত অক্টোবরে বাংলাদেশ গিয়েছিলাম। তখন ধাত্রীদের হাতে-কলমে সবকিছু শিখিয়েছি আমি। বলেছিলাম, তারা যেন নির্দিষ্ট পয়েন্টে গর্ভবতী নারীর কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। কিন্তু আমি দেখলাম তারা আলট্রাসাউন্ডের উপাদানগুলো যেভাবে ধরে সেটা মোটেও সঠিক নয়। কিন্তু তারা হাত দিয়েই সব কাজ করতে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ। তাই আমার টিম মিলে আমরা এমন একটা যন্ত্র বানানোর চেষ্টা করি, যেটা কিনা তাদের জন্য খুবই উপযোগী হবে।’অবশেষে সফল হলেন তিনি- ‘এটা তাদের হাতের তালুতেই সেট হয়ে যাবে। এবং এজন্য কোনো ট্রেনিংয়েরও দরকার হবে না। সেখানে দিকনির্দেশক চিহ্ন দেওয়া আছে। শুধু ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তথ্য সংগ্রহ করলেই চলবে। ছোট্ট এই যন্ত্রটাই নির্দেশ করবে কোনো কিছু মা বা শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে কিনা।
’‘বাংলাদেশে খুব কম নারীই মাতৃত্বকালীন সময়ে দক্ষ হাতের সেবা পান। অন্যরা সেই গতানুগতিক পদ্ধতিরই মুখোমুখি হন। এই পোর্টেবল আলট্রাসাউন্ড যন্ত্র নির্দেশনা দেবে কোনো কিছু মা বা শিশুর জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠছে কিনা। মায়ের কোনো সাহায্য লাগবে কিনা সেটাও জানাবে এই যন্ত্র। এর অবশ্য ক্ষতিকর দিকও আছে। ব্যথা মাঝামাঝি পর্যায়ে না যাওয়া অব্দি কোনো দিকনির্দেশনা নাও আসতে পারে কখনো কখনো।’ বলছিলেন হেলেন।
মেডিকেল বিশেষজ্ঞ দল, ইঞ্জিনিয়ার ও গণস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা একসাথে তৈরি করেছেন এই যন্ত্র। এটি বিশ্বে এক বছরে ২৮৯,০০০ মায়ের মৃত্যু, ২.৮ মিলিয়ন সদ্যেজাতের মৃত্যু এবং ২.৬ মিলিয়ন মৃত বাচ্চার জন্মদান কমাতে সক্ষম হবে বলেই আশাবাদী হেলেনের দল।