যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে চার ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড় ‘লেন’ আঘাত হানতে যাচ্ছে। অন্যদিকে বন্যা কবলিত জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে বৃহস্পতিবারই আঘাত করার কথা রয়েছে শক্তিশালী টাইফুন ‘সিমারন’র।
হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকারি সংস্থাগুলো।
দু’সপ্তাহ আগেই হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জকে পাশ কাটিয়ে চলে যায় ঘূর্ণিঝড় হেক্টর। এতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও সর্বোচ্চ সতকর্তায় ছিল দেশটির বিভিন্ন সংস্থাগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, এ ঝড়ে বাতাসের তীব্রতা এবং বৃষ্টি ও সামুদ্রিক ঢেউয়ের কারণে সৃষ্ট বন্যায় প্রাণহানির ঝুঁকি রয়েছে। ঘণ্টায় ২৪৯ কিলোমিটার বেগে এই হারিকেন আঘাত আনার সম্ভাবনা আছে বলেও জানানো হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দ্বীপগুলোর খুব কাছ দিয়েই বয়ে যাচ্ছে হারিকেনটি। যেকোনো সময় এ তাণ্ডব আঘাত হানতে পারে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে।
এর আগে হাওয়াইয়ে শক্তিশালী ৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় আঘাত এনেছিল ১৯৯৪ সালে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ২০ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ ঝড় মাউই, লানাই ও মনোকা দ্বীপের ওপরও আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের গভর্নর ডেভিড ইগে। হারিকেন লেন যেভাবে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে, অন্য কোনো হারিকেন অত তাড়াতাড়ি এতটা শক্তি সঞ্চার করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাপানের দিকে ধেয়ে আসা টাইফুন সিমারনের কারণে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপান আবহাওয়া সংস্থা জানায়, টাইফুন সিমারন বুধবার গ্রিনিচ মান সময় রাত ১১টায় গোতো দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটির প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ২১৬ কিলোমিটার।
সংস্থাটি জানায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাতে টাইফুনটি আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। টাইফুনের প্রভাবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জাপানের মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে সর্বোচ্চ ৮‘শ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে।
টাইফুনে প্রাণহানির আশঙ্কায় জাপানের ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জুলাইয়ে আঘাত হানা ভয়াবহ বন্যার রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি জাপান। বহু জায়গায় এখনো ব্যাপকভাবে বন্যার পানি জমে আছে। চলছে সেই অবস্থা থেকে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা। এর মাঝে হঠাৎ আবার এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সরকার।
তবে জাপানের প্রধানমন্তী শিনজো আবে সবাইকে সাহস যুগিয়ে বলেছেন, দুর্যোগকে দ্বিতীয় পর্যায়ের ভয়াবহতায় পৌঁছানো ঠেকাতে সবাইকে সাহসী ও সচেতন হতে হবে। ‘ভুয়া খবরে আতঙ্কিত হবেন না, দ্রুত সম্ভাব্য আক্রান্ত এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন এবং নিজেকে রক্ষা করার জন্য যা যা সম্ভব করুন,’ বলেন তিনি।