ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারের উপরে হাইকোর্ট যে স্থিতাবস্থা জারি করেছিলেন, তা ২ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ঋণখেলাপির ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ নেওয়া সুবিধাভোগীরা এই ২ মাসের মধ্যে নতুন ঋণ নিতে পারবেন না বলে সোমবার আদেশে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
সেই সাথে আদালত বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
এরআগে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করে বিষয়টি ৮ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগ বিষয়টির ওপর শুনানি নিয়ে আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আর অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আজকের আদেশের বিষয় আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশটি ২ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন তবে ঋণ খেলাপির ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ নেওয়া কোন সুবিধাভোগী এই ২ মাসের মধ্যে নতুন ঋণ নিতে পারবেন না।’
এর আগে ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারের উপর স্থিতাবস্থা দুই মাস বাড়িয়ে গত ২৪ জুন আদেশ দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারটি স্থগিত চেয়ে করা সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২১ মে হাইকোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের উপর স্থিতাবস্থা জারির আদেশ দেন।
আদেশের সময় হাইকোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই সার্কুলারকে ‘দুষ্টের পালন, শিষ্টের দমন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারটির বিষয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছেন, ‘২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের যে সার্কুলার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটা হচ্ছে ঋণ খেলাপিদেরকে নতুন করে একটা সুযোগ দেয়া। যেখানে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ খেলাপিরা ‘খেলাপির’ হাত থেকে মুক্তি পাবে, সিআইবিতে তাদের নাম থাকবে না। তখন নতুন করে হাজার হাজার কোটি টাকা তারা আবার ঋণ নিয়ে যাবে। এতে ব্যাংকের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে।’
এর আগে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের বিষয়টি উল্লেখ করে গত ১৬ মে একটি সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।