‘সালাউদ্দিন ছিল আমাদের পরিবারের খুঁটি। খুঁটি ভেঙে পড়া ঘর কেমন থাকে সেটা তো কাউকে বলে বোঝাতে হবে না।’ এই একটি বাক্যেই পরিস্কার হলি আর্টিজানে হামলার খবর পেয়ে মানুষ বাঁচাতে সেখানে ছুটে গিয়ে শহীদ ওসি সালাউদ্দিনের পরিবারের এখনকার পরিস্থিতি। কথাগুলো বলছিলেন বনানী থানার সেসময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিনের বড় ভাই রাজিউদ্দীন।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, ওসি সালাউদ্দিনের মৃত্যু যেমন পরিবারের জন্য বড় ধাক্কা, তেমনি সেটা পরিবারের সবচেয়ে বড় গৌরবেরও অংশ। ‘দেশে একটি ভয়াবহ জঙ্গিবাদের শিকার ছিল সে। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জনগণ জানতে পেরেছে যে দেশে এ ধরনের জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হয়েছে।’
হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার পর জঙ্গিবাদ দমনে আরো বেশি তৎপর হয়ে উঠে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।সে কথা উল্লেখ করে রাজিউদ্দীন বলেন: তার মৃত্যুর পরই জোরেশোরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় ও পুলিশ প্রশাসনের দৃঢ় মনোভাবের কারণে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। তা না হলে আরো বড় সব দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।
তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে হলেও দেশে জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি মনে করি দেশে জঙ্গিবাদের মোটামুটি ৮০ শতাংশ নির্মূল হয়েছে। যেখানে খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই অবস্থান গ্রহণ করছে পুলিশ। সালাউদ্দিনের প্রাণ হারানোর মধ্য দিয়ে দেশের এই সচেতনতা অবশ্যই আমাদের পরিবারের জন্য গর্বের বিষয়।
তবে ছোট ভাইকে হারিয়ে ওসি সালাউদ্দিনের পরিবার পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে জানান রাজিউদ্দীন। বলেন, আমি বড় ভাই, ২০০৯ সাল থেকে পরিবারের সবই সে দেখতো, ভাই বোনদের যাবতীয় বিষয় সে দেখতো। যে সংসারটাকে দেখতো সে হঠাৎ করেই চলে গেলে যে অবস্থা হয় সেই অবস্থায় আমরা আছি। ঈদে সবার জন্য জামা কাপড় দিতো সে। এলাকার লোকজনকেও দিতো। এবারও অনেকে এসে ফিরে গেছে, আমরা কিছুই দিতে পারিনি।
ওসি সালাউদ্দিনরা ৬ ভাই ও তিন বোন ছিলেন। সালাউদ্দিনের আরেক ভাই মারা যান তার আরো একবছর আগে। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন ওসি সালাউদ্দিন।