গুলশানের অভিজাত হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর সেনা অভিযানে নিহত জঙ্গিদের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন এখনও হাতে পায়নি তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: হলি আর্টিজানে হামলায় ভিকটিম যারা মারা গিয়েছেন গত ১৯ জুন আমরা তাদের ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। হামলাকারীদের ময়না তদন্তের প্রতিবেদন এখনেও পাইনি, সেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন: মামলার তদন্তকাজ অনেকটাই এগিয়েছে। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ২১ জন প্রত্যক্ষদোষী ১৬১ ধারায় পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন আর ১৪ জন প্রত্যক্ষদোষী ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
‘মামলাটির তদন্তে হামলাকারীদের ময়না তদন্তের প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ। সেটি দ্রুত পেলে আমাদের তদন্তকাজে আরো সহায়ক হবে।’
মামলটি তদন্ত করতে গিয়ে গত এক বছরে নেওয়া পদক্ষেপগুলো বর্ণনা করে সিটিটিসি প্রধান বলেন: হলি আর্টিজানে যারা হামলা করেছিল তারা সবাই ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। এর বাইরে ওই ঘটনায় যারা পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছে এরকম অনেককে আমরা চিহ্নিত করেছিলাম। তাদের মধ্যে হলি আর্টিজানে হামলায় জড়িত ছিল এরকম আটজন গত এক বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে।
তদন্তকাজ কবে নাগাদ শেষ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন: মামলাটিতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান ও বড় মিজানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন নিজেদের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
‘তবে আমরা এখনো পাঁচজনকে খুঁজছি, তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ওই পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের হামলার পরিকল্পনা ও এটির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সাথে খুব বড় ধরনের ভূমিকা ছিল,’ বলে তিনি জানান।
এই তিনজন হচ্ছে– সোহেল মাহফুজ, রাশেদ ওরফে র্যাশ এবং বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট।
‘তাদের ধরতে পারলেই তদন্তকাজ শেষ করতে পারবো।’
গত বছরের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে।জঙ্গিরা ওই রাতে ২০ জনকে হত্যা করে, যাদের নয়জন ইটালির নাগরিক, সাতজন জাপানি, তিনজন বাংলাদেশি এবং একজন ভারতীয়। এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের হামলায় পুলিশের দু’জন কর্মকর্তা প্রাণ হারান।জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় আহত হন পুলিশের অনেকে।
পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হয়।