চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

হলি আর্টিজান: জঙ্গি হামলার দুই বছরে কী পরিবর্তন ঘটেছে নিরাপত্তায়

গুলশানের অভিজাত রেঁস্তোরা হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার দুই বছর পার হচ্ছে ১ জুলাই। দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এরই মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। নেয়া হয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মত উদ্যোগ।

সরকারের এত সতর্কতা, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা এবং বিভিন্ন এলাকায় সকাল সন্ধ্যা নিরাপত্তা সতর্কতার পরও জনমনে প্রশ্ন রয়েছে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে। মানুষ আশংকা করছে যে কোনো সময় ঘটতে পারে জঙ্গি হামলা। জনগনের শঙ্কা নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোন পর্যায়ে আছে এই নিয়ে চ্যানেল আই অন লাইন কথা বলেছে দেশের বিশিষ্ট নিরপত্তা বিশ্লেষকদের সঙ্গে।

এই বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন: হলি আর্টিজানের সময়ে আমাদের যে ধরনের প্রস্তুতি ছিলো, এখন প্রস্তুতি সেই তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু প্রস্তুতি ভালো থাকলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে না যে, এই ধরনের হামলা আর হবে না। উন্নত বিশ্বে, ফ্রান্সে, জার্মানি, বেলজিয়ামেও সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে। আর আমাদের প্রতিবেশী দেশে তো আছেই। এটা শুধু আমাদের দেশের সমস্যা নয়। এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যা। তবে আমরা এখন এই ধরনের ঘটনায় অনেক দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেয়ার সক্ষমতা রাখি।

তিনি আরো বলেন, একটা মানুষ যখন নিজেকেই মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, তখন তাকে ঠেকানোর আর কি পদ্ধতি থাকতে পারে? আত্মহত্যা করতে চাইলে কেউ কি আর ঠেকাতে পারে?

প্রায় একই কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়্যারম্যান ড. জিয়া রহমান। তার মতে: ওই ঘটনার পরে ফর্মাল নানান পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, ইনফর্মাল জায়গা থেকে উন্নয়নের তেমন কোনো প্রচেষ্টা চালানো হয়নি।

তিনি বলেন, নাইন ইলেভেনের পরে সারা বিশ্বেই জঙ্গিবাদের প্রসার দেখা গেছে।  সেই ধরনের প্রভাব বিস্তারকারী শিক্ষা বাংলাদেশেও রয়েছে। এখানে পড়াশোনাতেও তেমন একটা যত্ন নেওয়া হয়নি কখনো। এর ফলে একটা নতুন শ্রেণী তৈরি হয়েছে।  যারা তরুণ সমাজকে প্রভাবিত করছে। ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে অনেকে প্রভাবিত হয়ে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষিত তরুণ পড়াশোনা, অ্যাপসের দক্ষতার কারণে তাদের হাতে বন্দী হয়ে যাচ্ছে।

জিয়া রহমান বলেন, তবে ভালো দিক হলো, হলি আর্টিজানের পরে সারাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এর পরে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে ফর্মালি ঠিকমতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে ইনফর্মাল জায়গায় যে সামাজিক আন্দোলন তৈরি করার কথা ছিলো সেখানে ভঙ্গুরতাটা রয়েই গেছে। পরে অনেকগুলো অপারেশনের কারণে এবং যুদ্ধাপরাধীর বিচারের কারণে গ্রুপগুলোর অবস্থান ভঙ্গুর হয়ে গেছে ফলে সেই আশঙ্কাটা কিছুটা কমেছে। তবে আর যেন কেউ সেদিকে না যায়, সেই বিষয়টা নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজানকে জঙ্গি হামলার প্রাথমিক পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে দেখেছিল হামলাকারীরা। হলি আর্টিজানে আক্রমণ করা শুধু তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকায় এমন একটি জায়গাতে আক্রমণ করা যেখানে বিদেশী নাগরি চলাচল বেশি করে। যাতে বাইরের দেশগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। সেই মূল হামলার অংশ হিসেবে হলি আর্টিজানে হামলা করেছিলো তারা।