গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজসহ নব্য জেএমবি’র ৪ সদস্যকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) টিএম মোজাহিদুল ইসলাম বিপিএমের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে তাদের আটক করা হয়।
অাটককৃতরা হলো, হলি আর্টিজান হামলার প্রধান আসামী এবং উত্তরবঙ্গের জেএমবির প্রধান দায়িত্বশীল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাদিপুর কাবলিপাড়া গ্রামের সোহেল মাহফুজ ওরফে শাহাদাত (নসরুল্লাহ, রিমন), চাঁপাইনবাবগঞ্জের নব্য জেএমবির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক সদর উপজেলার চরমোহনপুর মোড়ের বাসিন্দা জামাল(৩৪) ওরফে মোস্তফা, একই জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের নব্য জেএমবির আইটি বিশেষজ্ঞ হাফিজুর রহমান ওরফে হাসান (২৮) ও শিবগঞ্জ উপজেলার বিশ্বনাথপুর কাটিয়াপাড়ার নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সদস্য জুয়েল (২৬) ওরফে ইসমাইল।
পুলিশ সুপার টি.এম মোজাহিদুল ইসলাম বিপিএম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চৌডলা সড়কের পুস্কুনিপাড়া এলাকার জনৈক ফজলুর রহমানের আম বাগানে গোপন বৈঠক করার সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গোয়েন্দা সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে এখনো ধরা পড়েনি ওই হামলায় জড়িত আরও চার জঙ্গি, তাদের নাম রাশেদ ওরফে র্যাশ, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট, ডাক্তার রোকন ও ছোট মিজান।
গত বছরের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। জঙ্গিরা ওই রাতে ২০ জনকে হত্যা করে, যাদের নয়জন ইটালির নাগরিক, সাতজন জাপানি, তিনজন বাংলাদেশি এবং একজন ভারতীয়।
এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের হামলায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় আহত হন পুলিশের অনেকে। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হয়।
জঙ্গি হামলার এক বছর পর এই বছরের ১ জুলাই নিহত ৫ জঙ্গি ও ১ সন্দেহভাজনের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে তাদের মৃত্যুর কারণ গুলি ও বোমার আঘাত। গত ১৯ জুন ওই হামলায় নিহত ভিকটিমদের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেয়া হয়।
এখন পর্যন্ত এ মামলায় ২১ জন প্রত্যক্ষদর্শী ১৬১ ধারায় পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন আর ১৪ জন প্রত্যক্ষদর্শী ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এই হামলার আরেক পরিকল্পনাকারী রাজীব গান্ধীকে ১৩ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।