চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ, হবিগঞ্জ: গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া ‘রাজনীতি’ চলচ্চিত্রে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার রাজমিস্ত্রি ইজাজুল মিয়াকে হয়রানীর অভিযোগে চিত্র নায়ক শাকিব খানসহ ওই চলচ্চিত্রের প্রযোজক ও পরিচালকের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা হয়েছে। পাশাপাশি ওই সিনেমার প্রদর্শন বন্ধেরও দাবি করা হয়েছে।
মামলার অপর আসামীরা হলেন ‘রাজনীতি’র পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস ও প্রযোজক আশফাক আহমেদ।
রোববার দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বানিয়াচং উপজেলা সদরের যাত্রাপাশা গ্রামের মোবারক মিয়ার ছেলে রাজমিস্ত্রি ইজাজুল মিয়া (২৫) মামলাটি দায়ের করেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা জাহানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ইজাজুল মিয়া। আদালত মামলা আমলে নিয়ে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া ‘রাজনীতি’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে নায়ক শাকিব খান নায়িকা অপু বিশ্বাসকে একটি মোবাইল ফোন নম্বর দেন। মূলত ওই নাম্বারটির গ্রাহক বাদী ইজাজুল। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর শাকিব খানের মোবাইল নাম্বার মনে করে অসংখ্য নারী- পুরুষ ইজাজুলকে ফোন করতে থাকেন। দিন নেই, রাত নেই, দেশ-বিদেশ থেকে আসা শাকিব ভক্তদের ফোনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন বাদী ইজাজুল।
বাদী ইজাজুল মিয়া জানান, পরনারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছি সন্দেহে স্ত্রী ১৭ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। পরে রাজনীতি সিনেমা দেখে তার ভুল ভাঙ্গে। এছাড়া দিনে কয়েকশ’ কল আসার কারণে মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় সারাদিন।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বলেন, কারও অনুমতি ছাড়া অন্যের নাম্বার নিজের বলে প্রচার করা বেআইনী। গত ১০ জুলাই থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ইজাজুলের নাম্বারে ৪৩২টি কল আসে। বেশি বেশি কল আসার কারণে ইজাজুলের মোবাইল ব্যস্ত থাকে সারাদিন। ফলে মালিক ক্ষুব্ধ হয়ে সিএনজি অটোরিকশা চালকের চাকরি থেকে তাকে বাদ দেন বলেও জানান যায়।
এই পরিস্থিতিতে ইজাজুল ২৮ সেপ্টেম্বর বানিয়াচং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। টাকা না থাকায় প্রথমে মামলা করতে না চাইলেও নিরুপায় হয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
পরে রোববার অনুমতি ছাড়া সিনেমায় মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করা এবং সেটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় প্রতারণা ও ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়।