সফর শুরু হয়েছিল টেস্টে ৩৩৩ রানের হার দিয়ে। শেষেরটা ৮৩ রানের। সঙ্গে লজ্জার বিশ্বরেকর্ড হজম। মাঝের ম্যাচগুলোতেও একই অবস্থা। সব মিলিয়ে সাউথ আফ্রিকা সফর যেন হার মানা হারের!
এক ওভারে টানা পাঁচ ছক্কা, সঙ্গে দ্রুততম শতকের রেকর্ড হজম। গোটা সফরে অনেক কিছু হয়েছে, কিন্তু এমন দিন আসেনি। প্রথম টেস্টের পর ইনিংস ও ২৫৪ রানে দ্বিতীয় টেস্ট হারে মুশফিকের দল। ওয়ানডেতেও হার ছিল বিশাল ব্যবধানে। ১০ উইকেটে হার দিয়ে শুরু, পরের দুই ম্যাচে ১০৪ ও ২০০ রানে পরাজয়। ব্যতিক্রম শুধু প্রথম টি-টুয়েন্টি। ব্যবধান ছিল ২০ রানের।
শেষ টি-টুয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড মিলার, হাশিম আমলা দলকে ২২৪ রানের সংগ্রহ এনে দেন।
মিলার ২৩ বলে অর্ধশতকে পৌঁছানোর পর ৩৫ বলে শতকে পা রাখেন। টি-টুয়েন্টিতে এটিই দ্রুততম শতক। আগের দ্রুততম শতক ছিল সাউথ আফ্রিকারই রিচার্ড লেভির। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১২ সালে, ৪৫ বলে।
আমলা এদিন ৮৫ করেন, ৫১টি বল খেলেন। তার ভেতর চার মারেন ১১টি বলে। ছয় একটিতে। তার মানে বাকি ৩৪টি বলে হয় সিঙ্গেল না হয় ডাবল। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা যা পারেনই না!
আমলা ফিরে যাওয়ার পর হামলা শুরু করেন মিলার। ৩৬ বলে ১০১ রানে অপরাজিত থাকার দিনে চূড়ান্ত হামলা চালান সাইফউদ্দিনের চতুর্থ এবং ইনিংসের ১৯তম ওভারে। আগের তিন ওভারে ২২ রান দিয়ে দুই ‘দানব’কে (ভিলিয়ার্স, আমলা) ফেরানো সাইফ প্রথম পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা হজম করে বসেন! লজ্জার রেকর্ডের মুখোমুখি হতে হতে বেঁচে যান। শেষ বলটি অফস্টাম্পের বেশ বাইরে করেন। মিলার এবার এক নিতে পারেন।
অথচ শুরুটা ছিল অন্যরকম। দলীয় সাত ওভারের ভেতর নিজের চার ওভারের কোটা শেষ করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতেই একটানা বল করে যান তিনি। এদিনও বোলিংয়ে উদ্বোধন করেন। দুই উইকেট নিয়ে নেন।
এদিন নিজের দ্বিতীয় ওভারে সাফল্য পান সাকিব। মাঙ্গালিসো মোসলকে (৫) বোল্ড করেন। অনেকটা আর্ম ডেলিভারির মতো সোজা পড়ে সোজা যায়। হালকা গতিও কমে গিয়েছিল। মোসলে লাইন মিস করে পায়ে লাগান। সেখান থেকে বল লাগে অফস্টাম্পে।
পঞ্চম ওভারের শেষ বলে জেপি ডুমিনিকে (৪) ফেরান ওই সাকিব। ফুল লেন্থের ডেলিভারি সুইপ করতে যেয়ে ‘ফুল’ বনে যান স্বাগতিক অধিনায়ক।
দুই উইকেট নিতে চার ওভারে ২২ রান খরচ করেন সাকিব।
নিজের চতুর্থ ওভারের আগ পর্যন্ত সাইফ বেশ বৈচিত্র্যময় বোলিং করেন। ইয়র্কার, কাটারে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করতে থাকেন। অন্যদিকে তাসকিন, রুবেলরা শুরু থেকেই খরুচে। তাসকিন তিন ওভারে ৪১ দেন। রুবেল চার ওভারে খরচ করেন ৫১।
জবাব দিতে নেমে সৌম্য-ইমরুল আক্রমণাত্মক থাকার চেস্টা করেন। কিন্তু চেষ্টা করলেই তো হয় না, দম থাকা চাই। ইমরুল ছয় রানে রানআউট হওয়ার পর সৌম্য ৪৪ পর্যন্ত থাকেন। ২৭ বলে এই রান করেন তিনি। প্রথম টি-টুয়েন্টিতে করেছিলেন ৪৭। তিন নম্বরে সাকিব এদিনও ব্যর্থ। ৪ বলে ২ করে বোল্ড হন। মাঝখানে রিয়াদ, শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ওই চেষ্টাতে আটকে থাকেন। ২০ বলে রিয়াদ করেন ২৪। সাইফউদ্দিন ২৪ বলে ২২।