মাহেরশালা আলীর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ডে। আলী তখন খুব ছোট। তিন বছর। ওই সময় তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। সেই ছোট বয়সেই এই ঘটনা তাকে ছুঁয়েছিল। খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। কিন্তু তার চেষ্টা ছিল, মা যেন তা বুঝতে না পারেন।
মা যখন আবার বিয়ে করেন, আলীর বয়স তখন ৯/১০। যাকে নিজের বাবা রেখে চলে গেছেন, সেখানে অন্য লোক কেন তাকে সহজভাবে মেনে নেবে? নেয়নি। সৎ বাবাকে কখনো তার বন্ধু মনে হয়নি।
এই পরিবারে আর্থিক অনটন ছিল। তবে তার ছোটবেলা মোটেও খারাপ ছিল না।
কিশোর বয়সেই আলীকে হতাশা পেয়ে বসে। এই হতাশার অন্যতম কারণ তার চারপাশের পরিবেশ। আলী বড় হচ্ছেন, কিন্তু তার চারপাশের পরিবেশ ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে। আর তা ভাবিয়ে তোলে আলীকে। তার বাবার বন্ধুদের অনেকেই মারা গেছেন এইডসে আক্রান্ত হয়ে। তাদের বয়স ২৮-২৯। দেখেছেন আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুদের হত্যা, জেল খাটা, মাদক ব্যবসা। ওই সময় নিজের বাবাকে সব সময়ের জন্য কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল তার মধ্যে। কিন্তু কখনো পরিবেশ তাকে গ্রাস করতে পারেনি। হতাশাকে পেছনে ফেলে সফল হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার।
ইনসমনিয়ায় ভুগেছেন আলী। রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন। আর তখন তাকে কবিতা লেখার নেশায় পেয়ে বসে। সারা রাত বসে কবিতা লিখতেন। ভালো গান করেন। র্যাপার হিসেবে রয়েছে পরিচিতি।
বাবা-মাকে ভালোবাসেন আলী। কিন্তু এক সময়ে দুজনের সঙ্গেই তার সম্পর্ক নষ্ট হয়। মায়ের সঙ্গে তো কয়েক বছর কথা বলেননি। বাবা এখন আর বেঁচে নেই। আলীর বাবা মঞ্চে অভিনয় করতেন। আলী গর্ববোধ করেন, বাবার মতো কিছু করতে পারছেন—এই ভেবে।
আলীর পরিবার ছিল ব্যাপ্টিস্ট। মাহেরশালা আলী ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পুরো নাম মাহেরশালা করিম আলী। আহমদিয়া মুসলিম কমিউনিটির সদস্য হন। আত্মবিশ্বাসী আলী। অস্কারের ইতিহাসে তার নাম যুক্ত হয়ে গেছে, মাহেরশালা আলী প্রথম মুসলিম অভিনেতা যিনি অস্কার পেলেন। ‘মুনলাইট’ ছবির জন্য এ বছর অস্কার জিতেছেন তিনি। হলিউড রিপোর্টার।