চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

হজে গিয়ে শয়তানকে পাথর মারা হয় কেনো?

হজের অন্যতম আমল হচ্ছে জামরায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ। হজের প্রধান অংশ ও দোয়া আদায়ের স্থান হিসেবে পরিচিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বিদায় ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত আরাফাতের প্রান্তরে অবস্থান করেন হাজিরা।

হজের প্রধান অংশ ও দোয়া আদায়ের স্থান হিসেবে পরিচিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বিদায় ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত আরাফাতের প্রান্তরে ছিলেন হাজিরা। সারা দিন আরাফাতের ময়দানে দোয়া-দরুদ ও জিকিরে ব্যস্ত থাকার পরে তারা আরাফাত থেকে হাজিরা মুজদালিফায় যান। রাতে মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করে ইবাদত-জিকির করে সময় কাটান। এরপরে শয়তানকে মারার জন্য সেখান থেকে প্রত্যেক হাজি ছোট আকারের ২১টি পাথর সংগ্রহ করেন।

মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায়ের পর হাজিরা কেউ হেঁটে, কেউ বাসে বা ট্রাকে চড়ে মিনায় ফেরেন। মিনায় পৌঁছে আল্লাহর মেহমানেরা বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করেন। এ ছাড়া তাঁরা কোরবানি করে, মাথার চুল ছোট করে অথবা একেবারে ফেলে দিয়ে এহরাম মুক্ত হন। মিনায় আরও দুদিন অবস্থান করে হাজিরা পর্যায়ক্রমে ছোট, মাঝারি ও বড় শয়তানকে তিনদফায় ৭টি করে পাথর মারেন।

এভাবেই হজের সময় শয়তানকে পাথর মারার প্রথা চলে আসছে। পবিত্র হাদিস শরীফে এ আমলের বিভিন্ন ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

পাথর নিক্ষেপের সওয়াব আখেরাতের জন্য সঞ্চিত থাকবে মর্মে ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আর তোমার পাথর নিক্ষেপ, তা তো তোমার জন্য সঞ্চিত করে রাখা হয়।’ (মুজাম কাবির : ১৩৩৯০)।

আরেক হাদিসের সূত্রমতে নিক্ষিপ্ত প্রতিটি পাথর একেকটা গোনাহে কাবিরা মোচন করবে। ‘আর জামরায় তোমার পাথর নিক্ষেপ, এতে তোমার নিক্ষিপ্ত প্রতিটি পাথরের বিনিময়ে এক একটা ধ্বংসকারী কবিরা গোনাহ মোচন করা হবে।’ (সহিহুত-তারগিব ওয়াত-তারহিব : ১১১২)।

সূর্যোদয়ের সময় থেকে পাথর নিক্ষেপের সময় আরম্ভ হয়। সূর্য ওঠার কিছু সময় পর দিনের আলোতে বড় জামরায় পাথর নিক্ষেপ করা হয়। দুর্বল ও যারা দুর্বলের শ্রেণীভুক্ত তাদের জন্য এবং মহিলার জন্য ১০ তারিখের রাতেই সূর্য উদয়ের পূর্বে ফজর হওয়ার পরে পাথর নিক্ষেপের সুযোগ থাকে। তিন দিনব্যাপী নির্দিষ্ট সময়ে পাথর মারতে পারেন হাজিরা।

বিভিন্ন হাদিস ও মাসয়ালা মোতাবেক পাথর নিক্ষেপের সময় ধীরস্থিরতা বজায় রাখা জরুরি, যাতে আল্লাহর নিদর্শনের অসম্মান না হয়। রাগ-আক্রোশ নিয়ে জুতা কিংবা বড় পাথর নিক্ষেপ করা কখনও উচিত নয় বলেও উল্লেখ আছে। পাথর নিক্ষেপের সময় বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটা ও প্রাণহানির ইতিহাস আছে।