এশিয়া কাপ হকিতে কখনও শেষ চারে খেলা হয়নি বাংলাদেশের। এবার কি তারা পারবে কঠিন চ্যালেঞ্জটা নিতে? ভাল প্রস্তুতি আর ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় হকিতে সফলতার আশায় লাল-সবুজরা। ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে এমন আশার কথাই শুনিয়েছেন দলের অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি।
বুধবার উদ্বোধনী ম্যাচে পুল এ’তে জাপানের সঙ্গে লড়বে ভারত। এরপরই ফ্লাডলাইটের আলোয় স্বাগতিক বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে পাকিস্তানের।
এশিয়া কাপ হকি শুরুর দুদিন আগে আসরের ট্রফি উন্মোচন হল। ৮ জাতির ১০ম এশিয়া কাপে ১১দিনের মহাযজ্ঞ। অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়ককে নিয়ে সোমবার বিকেলে করা হয়েছে ট্রফি উন্মোচন।
র্যাঙ্কিংয়ের ওপরের সারির দল সাউথ কোরিয়া, সঙ্গে চীন-জাপানের মতো দলগুলোর লক্ষ্যও শিরোপা জেতা। তবে ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চায় বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া এবং ওমান।
মাঠের লড়াই দুই রাত পোহালেই। তবে ভেন্যু এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। আয়োজকরা অবশ্য আশাই দিচ্ছেন। তাদের প্রত্যাশা, টুর্নামেন্টের আগেই সব কাজ শেষ হবে।
৩২ বছর পর ঢাকায় বসতে যাওয়া স্বাগতিক বাংলাদেশের কাছে টুর্নামেন্টটি যেমন চ্যালেঞ্জিং, তেমনই ভারত-পাকিস্তানের কাছে মর্যাদার লড়াইও। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কোরিয়ার লক্ষ্য সেখানে ট্রফি জিতে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলা।
সফলতার আশায় থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ক জিমি জানালেন, ‘শেষ তিনটা মাস আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি, সেখানে আগের টুর্নামেন্টগুলোতে করা ভুল শুধরে নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। একটা দল হিসেবে ওই টুর্নামেন্টগুলোতে আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারিনি। শেষ তিন মাস বিষয়গুলো নিয়ে অনুশীলন করেছি। যেন ভাল একটা দল গঠন করতে পারি; ভাল পারফর্ম করতে পারি। ট্রেনিংয়ে কোনও ত্রুটি ছিল না।’
আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাই ভাল ফলের আশার কথাই শোনান অধিনায়ক, ‘যেকোনো ম্যাচে আমরা ভাল ফলের আশা করছি। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হোক, ভারত হোক, জাপান হোক -আমরা প্রস্তুত। ভাল খেললে যেকোনো ম্যাচেই দারুণ কিছু ঘটানো সম্ভব। ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলার চিন্তা করছি। পাকিস্তান অবশ্যই ভাল দল। তাদের শক্তি, তারা কি ধরনের হকি খেলে, সেটা আমরা জানি। যদি নিজেদের দুর্বলতা দূর করে ওদেরকে টার্গেট করি, জাপান ম্যাচে আমাদের ভাল যে দিকগুলো ছিল, সেগুলোর আরও উন্নতি করতে পারি, দল হিসেবে ভাল করা যাবে।’
বাংলাদেশ অধিনায়কের মত টুর্নামেন্টে ভাল কিছু করার কথা জানিয়েছেন পাকিস্তান দলনায়ক মোহাম্মদ ইরফান, ভারতের গুরপিত সিং ও সাউথ কোরিয়ার লি।
টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মাওলানা ভাসানি স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো জ্বলা ফ্লাডলাইট। যদিও দিনের আলোয় অনুশীলনে ব্যস্ত দলগুলো। ভেন্যু প্রস্তুতির নির্ধারিত সময় পার হলেও এখনও অনেক কাজ বাকি। সে প্রশ্নে আশার কথা শোনালেন এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সিইও তৈয়ব ইকরাম।
‘আমি এ মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। আমার অন্তত সেটাই মনে হচ্ছে। সবাই দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। যেভাবে কাজ এগিয়ে চলছে, তাতে বিশ্বাস করি আসরের উদ্বোধনের আগেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। এখানকার দায়িত্বে থাকা লোকগুলোর ওপর আমার শতভাগ আস্থা আছে।’
শুধু মাঠই নয়, বিভিন্ন দলের আবাসন ও যাতায়াত সুবিধার জন্য যে ব্যবস্থা বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন করেছে তাতেও সন্তুষ্টি ঝরল এশিয়ান হকির শীর্ষ কর্মকর্তার কণ্ঠে।