ভারতে এক নবজাতক শিশুকে মৃত ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর মৃতদেহ সৎকারের সময় আবিষ্কার হলো, শিশুটি জীবিত। ভুলভাবে মৃত ঘোষণা করার এ ঘটনায় রাজধানী দিল্লির এক হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট দুই চিকিৎসককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বেসরকারি ম্যাক্স হসপিটালে গত ৩০ নভেম্বর দু’টি জমজ শিশুর জন্ম হয়। তাদের মধ্যে একজন মৃতই প্রসব হয়েছিল। আরেকজনও জন্মের বেশ কয়েক ঘণ্টা পর হাসপাতালে মারা যায় বলে কর্তব্যরত দুই ডাক্তার আনুষ্ঠানিকভাবে জানান। শিশু দু’টির দেহ একই প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ছোট ছোট মরদেহ দু’টো সৎকারের জন্য নিয়ে রাখা হলো। আর কিছুক্ষণ পরই শেষকৃত্য। হঠাৎ করেই শোকে বিহ্বল বাবা-মা খেয়াল করলেন লাশ রাখা ওই প্লাস্টিকের ব্যাগের ভেতর কী যেন নড়াচড়া করছে। ব্যাগ খুলতেই দেখা গেল ভেতরে ফুটফুটে একটি বাচ্চা তারই মৃত সহোদরের পাশে আঁকুপাঁকু করছে।
বিস্ময়ে হতবাক পরিবার তক্ষুণি নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানান জমজ শিশু দু’টোর দাদা। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে, বাচ্চাটি বেঁচে আছে এবং সে যথেষ্ট সুস্থ।
এ ঘটনার পরই পুরো দিল্লি জুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিতর্ক ওঠে ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলো ব্যয়বহুল চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে। এ ঘটনার জবাব চাইলে ম্যাক্স হসপিটাল থেকে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা শেষে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তখনই স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোকে জানানো হয় যে দায়িত্বরত ওই দুই চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় তদন্ত প্রক্রিয়া এখনো চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ভারতে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় এ ধরণের অবহেলা ও অমানবিকতার ঘটনা নতুন নয়। গত মাসেই সেখানকার আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে মৃত্যু হয় এক কিশোরীর। মেয়েটির মা-বাবা অভিযোগ করেন, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটি মাত্রাতিরিক্ত বিল ধরেছিল।