চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

স্মৃতিসৌধই যার কাছে বাবার কবর

বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম নীলনকশাকারী আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকার পর শহীদ আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাংলাদেশের সাফল্য আরো একধাপ এগিয়ে গেলো।

তিনি বলেন, এই আল বদর নেতা যেভাবে নিজেকে যুদ্ধাপরাধী নয় বলে প্রচার চালাচ্ছিলো, তাতে তার যুদ্ধাপরাধের বিচারটা একটু চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছিলো। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় সমাজকল্যাণমন্ত্রীও ছিলো সে। তবে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে বাংলাদেশ সক্ষম হয়েছে। এখন মনে করা যায়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফল হয়েছে।

মঙ্গলবার মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগ রায় দিলে তিনি তার ফেসবুকে বাবার স্মৃতি স্মরণ করে স্ট্যাটাস দেন।

একাত্তরের ৩০ আগস্ট দুই ট্রাক অস্ত্রসহ পাকিস্তানী হানাদাররা দেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় সুরকার আলতাফ মাহমুদকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। নাখালপাড়ার পুরনো এমপি হোস্টেলের একটি ছোট বাথরুমে রেখে নির্মম অত্যাচার করা হয়েছিলো তাকে। এরপর আর কখনোই ফিরে আসেননি ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র অমর সুরকার।

তখন তার মেয়ে শাওন মাহমুদের বয়স ছিলো মাত্র তিন বছর।

ছোটো বেলায় বাবা কোথায় জিজ্ঞেস করলে উত্তর পেতেন, বাবা বাংলাদেশের মাটির সঙ্গে মিশে আছেন। কবর কোথায় জানতে চাইলে স্মৃতিসৌধ দেখিয়ে বলা হতো, এটাই তোমার বাবার কবর। তখন তিনি জানতেন স্মৃতিসৌধই তার বাবার কবর।

বড় হয়ে জানতে পারলেন আসল ইতিহাস। বুঝতে পারেন, যে আল বদর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ।

বাবার স্মৃতিকে বুকে নিয়ে বড় হওয়া শাওন মাহমুদ সেই মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড নিশ্চিত হওয়ার খবরে আজ আরেকবার কেঁদেছেন। তবে এই কান্না সুখের এবং স্বস্তির।