মেলবোর্ন টেস্টে নিজেদের ‘পচনটা’ ঠেকাতে পারলেও স্টিভ স্মিথকে ঠেকাতে পারেনি ইংল্যান্ড। আর সে কারণেই ৮ বছর পর সুযোগ পেয়েও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জেতা হয়নি ইংলিশদের। অ্যাশেজের চতুর্থ ম্যাচে অজি অধিনায়কের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতেই জয়বঞ্চিত সফরকারীরা। ড্র ম্যাচে ক্যারিয়ারের ২৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেন স্মিথ।
প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার করা ৩২৭ রানের জবাবে ৪৯১ রান করে ইংল্যান্ড। ৪ উইকেটে ২৬৩ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ৯৯ রানের লিড নিয়ে স্বাগতিকরা যখন ইনিংস ছাড়ে তখন দিনের খেলা একেবারে শেষ প্রান্তে। ম্যাচে সম্ভব্য কোনও ফলাফল না দেখে ব্যাটে নামেনি ইংল্যান্ড। পরে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে দুদল।
প্রথম তিন টেস্টে চরম ব্যর্থতার পর মেলবোর্নেই নিজেদের খুঁজে পায় ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। সমালোচনার মুখে থাকা সাবেক অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক অপরাজিত ২৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। পরে ম্যাচসেরার পুরস্কারও পেয়েছেন। মূলত তার ব্যাটে ভর করেই ২০১১ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জেতার স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু প্রথমে বৃষ্টি এবং পরে স্মিথের চওড়া ব্যাট মিলে হতাশ করে েইংলিশদের।
১৬৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে অবশ্য ধাক্কা খেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। স্কোর বোর্ডে ৬৫ রান জমা হতেই আউট হন ক্যামেরন বেনক্রফট ও উসমান খাজা। উইকেটে থিঁতু হতে পারেননি শন মার্শও। তিনি করেন মাত্র ৪ রান করে। তবে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও জ্বলে উঠেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। প্রথম ইনিংসে শতকের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে এসেছে ৮৬ রান।
দলীয় ১৭৮ রানের মাথায় ওয়ার্নার সাজঘরে ফিরলেও অস্ট্রেলিয়াকে নিরাপদ রাখেন অধিনায়ক স্মিথ ও মিচেল মার্শ। পঞ্চম উইকেটে ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে শেষ দিনের বাকি সময়টা নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দেন। ১০২ রান করে অপরাজিত ছিলেন স্মিথ। মার্শের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬৬ বলে ২৯ রানের লড়াকু ইনিংস।
ক্যারিয়ারের ২৩তম সেঞ্চুরি করে একটি নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছেন স্মিথ। টেস্টে ১১০ ইনিংস খেলে ২৩ নম্বর শতকটি করে এই তালিকায় তিনি এখন তিননম্বরে। তার চেয়ে কম ইনিংস খেলে ২৩টি সেঞ্চুরি করেছেন ডন ব্রাডম্যান (৫৯ ইনিংস) ও সুনীল গাভাস্কার (১০৯ ইনিংস)। সিরিজে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। তবে পরিস্থিতির বিচারে আগের দুটির চেয়ে মেলবোর্নের ম্যাচ বাঁচানো সেঞ্চুরি অনেকটা এগিয়ে থাকবে।
এছাড়া আরও একটি মাইলফলকের সামনে চলে এসেছেন স্মিথ। আর মাত্র ২৬ রান করতে পারলেই অস্ট্রেলিয়ার ১৫তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছয় হাজার টেস্ট রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলতে পারবেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এবারের অ্যাশেজ সিরিজ এরই মধ্যে ৩-০ ব্যবধানে জিতেই নিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে সিডনিতে শুরু হবে সিরিজের শেষ ম্যাচ।