স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, প্রখ্যাত সুরকার ও বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অনুপ ভট্টাচার্য মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাত সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর আসগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার মৃত্যুর খবরটি চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেন সংগীতশিল্পী তানভীর আলম সজীব।দীর্ঘদিন ধরে অনুপ ভট্টাচার্যের সাহচর্যে ছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে তিনি জানান, অনুপ ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছিলেন।
তানভীর আলম সজীব জানান, অনুপ ভট্টাচার্যকে আমি কাকা ডাকতাম। তিনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। গানে তিনি আমার সবকিছু। তাকে হারানোর মধ্য দিয়ে অভিভাবক হারানোর শোক অনুভব করছি।
তিনি জানান, অনুপ ভট্টাচার্যের মরদেহ রাতে বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে। এরপর হবে শেষ কৃত্যানুষ্ঠান।
অনুপ ভট্টাচার্যের দুই মেয়ে দেশের বাইরে থাকেন।
তার মৃত্যুতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের আরেক শিল্পী তিমির নন্দী শোক প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ‘আমার গুরুভাই, বাংলাদেশের সংগীত জগতের কিংবদন্তী সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী, আমার সহযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শ্রদ্ধেয় অনুপ ভট্টাচার্য দা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে প্রয়াত হয়েছেন! গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এই মহান শিল্পীর সাথে সুসম্পর্ক। গান নিয়ে, সুর নিয়ে, অর্কেস্ট্রেশন নিয়ে একসাথে কত পথ কথা বলতে বলতে হেঁটেছি। সব শেষ আবি আনোয়ার ভাইয়ের লেখা একটি গান আমাকে দিয়ে বলেছিলেন, করোনা যাক, তারপর রেডিও কমার্শিয়াল সার্ভিসে গানটি তোকে দিয়ে রেকর্ড করবো। অনুপ দা’র সুর এতটাই আলাদা, এতটাই হৃদয়স্পর্শী তাতো সবারই জানা। আমরা একে একে এতিম হয়ে যাচ্ছি! আজ সংগীতের একটি ভাণ্ডার আমরা হারিয়ে ফেললাম! শুধুমাত্র সংগীতবোদ্ধারাই সেটা উপলব্ধি করতে পারবেন। গত কিছুদিন আগে পর পর চারজন সংগীতশিল্পী, সহযোদ্ধা, সহকর্মীদের হারিয়ে আমি এতটাই বিমর্ষ যে, গত এক মাস ফেইসবুকে কোন পোস্ট দিতে পারি না। ওপারে ভালো থাকুন, দাদা। ছোটভাইটিকে ক্ষমা করে দেবেন।’
অনুপ ভট্টাচার্য ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর, রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, নোঙর তোলো তোলোসহ কয়েকটি গানে সমবেত কণ্ঠ দেন তিনি।