বাংলাদেশে প্রথম বি আর টি গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) প্রকল্পের উত্তরা আজমপুর থেকে টঙ্গী কলেজ গেইট পর্যন্ত ফ্লাইওভারের উত্তরার হাউজ বিল্ডিং-এ প্রথম গার্ডার স্থাপন করা হয়েছে।
বুধবার ভোরে গার্ডারটি স্থাপন করা হয়। উক্ত অংশটুকু বাংলাদেশ সেতু কতৃপক্ষের অধীনে চাইনিজ কোম্পানি জেটিইজি নির্মাণ কাজে নিয়োজিত আছে। উক্ত গার্ডার স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ব্যবস্থাপক জি লেই উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন,এই প্রকল্প বাস্তাবায়নের জন্য নানা বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে। বিশেষ করে দিনে প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। ফলে তাদের রাতেই বেশি কাজ করতে হয়।
তাছাড়া মাটির নিচের অংশে কাজ করতে গিয়েও তারা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। সকল বাধা অতিক্রম করে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রথম গার্ডারটি স্থাপন করতে পেরে তারা অনেক খুশি।
ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জনগণের যাতায়ত নির্বিঘ্ন, দ্রুত ও আরামপ্রদ করতে প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় (বি আর টি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রতি ঘণ্টায় উভয় দিকে ৪০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গাজীপুরের জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট, যেখানে যানজটে পড়লে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়।
বিআরটি বাস থাকবে ১৪০টি। গাজীপুর-এয়ারপোর্ট পর্যন্ত মোট স্টেশন থাকবে ২৫টি।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি দাতা সংস্থা (এএফডি), গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় দুই হাজার ৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের মূল কাজের মধ্যে রয়েছে বিআরটি করিডোর ২০ কিলোমিটার, ফ্লাইওভার ৬টি, এলিভেটেড সড়ক ৪ কিলোমিটার, সংযোগ সড়ক ১৪১টি, মার্কেট উন্নয়ন ১০টি, স্টর্ম ড্রেন ১২ কিলোমিটার, ৮ লেন বিশিষ্ট টঙ্গী সেতু, গাজীপুর বাস ডিপো, জয়দেবপুর বাস টার্মিনাল ও এয়ারপোর্ট বাস টার্মিনাল এবং পিপিপির ভিত্তিতে বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকায় মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ।
৬টি ফ্লাইওভারের মধ্যে রয়েছে: এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার ৮১৫ মিটার, জসিমউদ্দিন ফ্লাইওভার ৫৮০ মিটার, কুনিয়া ফ্লাইওভার ৫৫০ মিটার, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজি ফ্লাইওভার ৫৫০ মিটার, ভোগড়া ফ্লাইওভার ৫৮০ মিটার এবং জয়দেবপুর ফ্লাইওভার দুই হাজার ১৪ মিটার।
গাজীপুর ও বিমানবন্দর স্টেশনে থাকবে দু’টি মূল টার্মিনাল। আর মাঝপথে হবে ২৫টি স্টেশন। প্রতি দুই থেকে ৫ মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে। এ সার্ভিসে ভাড়া আদায় হবে স্মার্ট কার্ডে।
যানজট নিরসনে বিআরটি বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত ব্যবস্থা। বিআরটি লাইসেন্স ছাড়া এ রুটে কেউ বাস চালালে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে আইনে।
এ ছাড়া আইনের কোনো বিধান কেউ লঙ্ঘন করলে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়ার বিধানও রয়েছে।