শুধু স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের জন্য আলাদাভাবে ফেসবুক বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। তাই রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ফেসবুক বন্ধ করা ঠিক হবে না জানিয়ে টেলিযোগাযোগ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ পরে তাদের মতামত যোগ করে চিঠিটি পাঠাবেন কেবিনেটে।
এই অবস্থায় ফেসবুক বন্ধ হচ্ছে এমন কোনো গুজব এবং গুজব নির্ভর সংবাদে কান না দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিটিআরসি। ফেসবুক বন্ধের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তের আগেই গুজব শুরু হওয়ায় “ফেসবুক বন্ধে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি” শিরোনামে একটি চিঠি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
এ বিষয়ে বিটিআরসির মতামত জানতে চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের জন্য আলাদা করে তো ফেসবুক বন্ধ করা সম্ভব নয়। রাত ১২টার পর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়া বহু প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি এই সামাজিক মাধ্যমটি ব্যবহার করেন। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ের অনলাইন বিজনেসের জন্যও এই সময়ে ফেসবুক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এছাড়া বিদেশে যোগাযোগের জন্যও মধ্যরাতের সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। শিশু-কিশোরদের জন্য এখন গোটা মাধ্যমটাকে বন্ধ করে দেয়া ঠিক হবে না। বরং শিশু-কিশোরদের নেতিবাচক প্রভাব থেকে দূরে রাখতে অভিভাবকদেরই দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রয়োজনে বাবা-মা বাসার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড পরিবর্তনসহ নানারকম নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নিতে পারেন। আসলে শিশুদেরকে ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে দূরে রাখতে সবার আগে দরকার প্যারেন্টাল গাইডেন্স (অভিভাবকের নির্দেশনা)।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানিয়েছে, সরকার ফেসবুক বন্ধের বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, যেসব গুজবধর্মী সংবাদ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে সেগুলো সঠিক নয়। গুজব না বন্ধ করতে সরকার ফেসবুক বন্ধের বিষয়ে কোনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি জানিয়ে একটি চিঠি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছি।’
বিভ্রান্তি দূর করতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠির কপিটি প্রকাশ করা হলো:
গত বছর জুলাই মাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে ডিসি সম্মেলনের সময় জেলা প্রশাসকরা সরকারকে এ পরামর্শ দেন। সেখানে আলোচনা হয়, রাত জেগে সামাজিক যোগাযোগের এ মাধ্যমটি ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থী ও তরুণদের কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। নেশার মতোই তারা মাধ্যমটি ব্যবহার করছে। সে কারণে রাতে ফেসবুক বন্ধ রাখার সুপারিশ আসে।
সেই বৈঠকের সূত্র ধরে গত ২৭ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে একটি চিঠি পাঠায়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এর মতামত জানতে চায়।