বৃহস্পতি গ্রহের কাছ দিয়ে যেসব গ্রহাণু ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছে নাসা।
শনিবার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে ‘লুসি’ নামের এই মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি সৌরজগতের ‘জীবাশ্ম’ খোঁজার অভিযান। কীভাবে সৌরজগৎ তৈরি হয়েছে, এই অভিযান সেই রহস্য উন্মোচনে সহায়তা করবে বলে আশা তাদের।
বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথে গ্যাসের যে বিশাল আস্তরণ আছে, সেখানে গ্রহাণুরা ঝাঁক বেধে ঘুরতে থাকে, সেই গ্রহাণুগুলো পর্যবেক্ষণ করবে লুসি।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহগুলোর গঠন হওয়ার সময় এসব বস্তু অবশিষ্টাংশ হিসাবে রয়ে গেছে। ফলে ট্রোজান নামে পরিচিত এসব গ্রহাণুর ভেতরে সৌরজগতের গঠন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র থাকতে পারে।
আগামী ১২ বছর ধরে এই অভিযানে ৯৮ কোটি ১০ লাখ ডলার খরচ করার পরিকল্পনা করেছে নাসা। এই সময়ে লুসি সাতটি ট্রোজান (গ্রহাণু) পর্যবেক্ষণ করবে।
আফ্রিকা থেকে পাওয়া মানবদেহের একটি সুপরিচিত ফসিলের নামে নাম রাখা হয়েছে ‘লুসি’। ওই ফসিলের মাধ্যমে পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে অনেক তথ্য উদ্ধার করতে সক্ষম হন গবেষকরা।
কলোরাডোর সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পক্ষে লুসি’র প্রধান পরীক্ষক হ্যাল লেভিশন বলেন, ট্রোজান গ্রহাণুগুলো বৃহস্পতির কক্ষপথে ৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ঘুরতে থাকে। তারা বৃহস্পতি আর সূর্যের মহাকর্ষীয় প্রভাবে আটকে আছে। সৌরজগতের শুরুতে যদি সেখানে কোন বস্তু রাখা হয়, তাহলে সেটা চিরদিন সেভাবেই থাকবে। সুতরাং বলা যায়, এগুলো আসলে কোন গ্রহ থেকে তৈরি জীবাশ্ম।
লুসি একেকটা শহরের সমান বড় এসব বস্তু পরীক্ষানিরীক্ষা করবে। এগুলোর আকার, গঠন, ভূপৃষ্ঠের উপাদান, তাপমাত্রা এবং কী দিয়ে তৈরি- এসব বিষয় পরীক্ষা করবে। এর পাশাপাশি বৃহস্পতি গ্রহের আশেপাশে অন্য যেসব গ্রহাণু আসবে, সেগুলোও পরীক্ষা করে দেখবে লুসি।