ভারতের সৌদি দূতাবাস কূটনীতিকের বাসা থেকে নির্যাতন, যৌন হয়রানি এবং মাসের পর মাস আটকে রাখার অভিযোগ করা দুই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের পর মিডিয়ার কাছে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তারা। সোমবার রাতে উদ্ধারকৃত গৃহস্থালী কাজে নিয়োজিত এই দুই নারী নেপালের নাগরিক। এদের মধ্যে একজনের বয়স ৫০ বছর এবং অপরজনের বয়স ২০ বছর।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এনডিটিভিকে জানায়, ‘আমরা পুলিশের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছি এবং এ বিষয়ে সৌদি দূতাবাসের সাথে আমরা যোগাযোগ রাখছি।’
নতুন নিয়োগকৃত একজন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার নারীদের দুরবস্থা দেখার পর পালিয়ে গেলে এই অমানবিক এই ঘটনাটি প্রকাশ পায়। গৃহকর্মীটি অলাভজনক বেসরকারি সংস্থা ‘মৈত্রী ইন্ডিয়া’র সাথে যোগাযোগ করলে তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। নেপালের দূতাবাসের সমর্থনের ভিত্তিতে অভিযোগটি করা হয়।
‘মৈত্রী ইন্ডিয়া’র বালকৃষ্ণা পান্ডে বলেন, নারীদেরকে প্রথমে সৌদি আরবের একটি হোটেলে রাখা হয়েছিলো, প্রায় তিনমাস আগে তাদের ভারতে আনা হয়। নির্যাতন এবং যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয় তাদের, যার দৃশ্যমান ক্ষত তাদের শরীরে রয়েছে।
নিযার্তনের অভিযোগ করা নারীদের একজন জানান, আমরা তিন থেকে চার মাস ধরে বন্দি অবস্থায় রয়েছি। তারা আমাদের ধর্ষণ করেছে, বন্দি রেখেছে, কোনো খাবারও দেয়া হয়নি। চলে আসার চেষ্টা করলে তাদেরকে মারধোর করা হতো বলেও জানান তিনি।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, নির্যাতনের সাথে জড়িত ব্যক্তি কূটনীতিক কিনা এ বিষয়ে এখনও তারা নিশ্চিত নয়। বাসাটিতে গিয়ে দুই জন সৌদি নারীর দ্বারা গৃহকর্মী মেয়ে দুটিকে মারধর করার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এমনকি সৌদি নারীরা পুলিশ সদস্যদের সাথেও দুর্ব্যবহার এবং লাঞ্চিত করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার মামলা করা হলেও ঘটনায় কূটনীতিকের নিরাপত্তার বিষয় থাকায় পরবর্তীকালে মামলায় কাজ কিভাবে অগ্রসর করা হবে সে বিষয়ে দ্বিধাদন্দ্বের কথা জানায় পুলিশ। শীর্ষ পর্যায়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এই মামলাটি একেবারেই ভিন্ন ধরনের এবং একজন কূটনীতিক কতটা অধিকার ভোগ করেন সে বিষয়ে বুধবার তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করবেন।
তবে সৌদি আরবের দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগটিকে মিথ্যা বলে অভিহিত করা হয় এবং জানানো হয় তাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে এই অভিযোগ তার বিপরীত।