সৌদি আরবে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসাহীন অস্বাস্থ্যকর বাসস্থানে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে বেশ কয়েক হাজার এশীয় শ্রমিক।
যেসব প্রতিষ্ঠানে এই শ্রমিকরা কাজ করতো সেসব প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে না বেতন, নিচ্ছে না খোঁজ। তাই অনাহারেই একরকম অনিশ্চিত জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের।
এশীয় শ্রমিকদের এই দুঃসহ যন্ত্রণার কথাই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে ওপেন ডেমোক্রেসি সাইট, নিউজউইকসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
বেশ কয়েক মাস ধরেই এই অচলাবস্থা চলছে। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন এবং পাকিস্তানের এই শ্রমিকদের এমন দুর্দশাতেও নিশ্চুপ সৌদি প্রশাসন। এতো কর্মীকে এমন অসহনীয় অবস্থায় ফেলা প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো সাড়াই দিচ্ছে না। এমনকি পাওনা বেতন-ভাতা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে এই শ্রমিকদের।
নিজ দেশের শ্রমিকদের মানবিক সাহায্য পাঠিয়েছে ভারত। বেতন-ভাতা বঞ্চিত শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সাহায্য দিচ্ছে পাকিস্তান দূতাবাস। চরম মানবিক সংকটে সৌদি ছেড়ে দেশেও ফিরতে পারছে না শ্রমিকরা। কারণ খালি হাতে দেশে ফিরে পাওনা টাকা না পাওয়ার দৃষ্টান্তও আছে। এরকমই ঘটনা ঘটেছে সৌদি ফেরত ফিলিপাইনের ১’শ ২৯ শ্রমিকের সাথে।
শুধু প্রবাসেই নয় সৌদিতে শ্রমিকদের এই অসহনীয় পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে নিজ নিজ দেশে রেখে যাওয়া পরিবার-পরিজনদের মধ্যে। ঋণের টাকায় কর্মক্ষম মানুষটিকে সৌদি পাঠিয়ে এখন বিপাকে এসব দরিদ্র পরিবার।
সৌদিতে প্রবাসী শ্রমিকদের এমন মানবেতর জীবনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কাদিসিয়া শ্রমিক ক্যাম্প। কাদিসিয়া ক্যাম্পের মতোই আরও ক্যাম্প আছে প্রখর তাপের সৌদি মরু অঞ্চলে।
২০১৪ সালে বিশ্ববাজারে তেলের দামে ধস নামার পর থেকেই রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যয় সংকোচন করছে সৌদি আরব। এর প্রভাব পড়েছে সৌদি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এশীয় শ্রমিকদের একটি বড় অংশের রুজি-রুটির যোগান দেয়া এই প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ায় চরম মানবিক সংকট শুরু হয়।
বিদেশী শ্রমিকদের মানবেতর জীবন নিয়ে খবর প্রকাশের পর গত জুলাই মাসে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাহায্য করার অঙ্গীকার করেছিলেন মক্কা অঞ্চলের শ্রম মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তবে এই কয়েক মাসেও অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সৌদি প্রশাসন।