সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে দীর্ঘ এক বছর পর ‘নিখোঁজ’ ছেলেকে
কোলে পেয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন মুন্সিগঞ্জের এক দম্পতি।
খোঁজ পাওয়া
ছেলেটির নাম উজ্জ্বল (১২)। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার পঞ্চসার
উপজেলার দয়াল বাজার গ্রামে। বুধবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে তাকে খোঁজে পেয়েছেন মা-বাবা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটে ঢুকেই ছেলেকে দেখেই কেঁদে ওঠেন মা নুরজাহান বেগম (৪১)।‘সোনাবাপ আমার কই ছিলি তুই’ বলে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন তিনি। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ ধরে রাখতে না পেরে কেঁদে ওঠেন বাবা গিয়াসউদ্দিন পোদ্দার (৫২)। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার কান্না দেখে সেখানে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরাও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নুরজাহান বেগম সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,‘আল্লায় আপনাদের অনেক ভালো করুক। আমি আমার মানিকরে খুঁইজা পাইছি। আল্লায় আপনাগো ভালো করবো।’
তার বাবা গিয়াসউদ্দিন পোদ্দার চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, গত বছর ২৩ জুন গ্রামের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় উজ্জ্বল (১২)। অনেক খোঁজাখুজির পরও ছেলেকে না পেয়ে মুন্সিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি (ডায়েরি নং-৩৫২)।
একবছর আগে নিখোঁজ হলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট সংলগ্ন মার্কেটের সামনে দুই মাস আগে (মে মাসে) তাকে আবিষ্কার করেন দোকান কর্মচারীরা। এই সময়টায় উজ্জ্বলের দেখাশোনা করতেন তারাই।
দোকান মালিক মো: শান্ত মিয়া বলেন,‘তাকে খাওয়া দাওয়া এবং গোসলের ব্যবস্থা করেছে কর্মচারীরা। এমনকি ঈদের ছুটিতে ক্যাম্পাস বন্ধের সময়ও তাকে এসে খাবার দিয়ে যাওয়া হতো।’
ঈদের পরে ক্যাম্পাস খুললে অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন ও কয়েকজন শিক্ষক উজ্জ্বলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করে তার পরিবারের খোঁজ জানাতে সবার কাছে সহযোগিতা চান।
ইসমাইল বলেন,‘আমার বাসা মুন্সিগঞ্জ হওয়ায় এই খবরটি ফেসবুকের স্থানীয় সব পেজ থেকে শেয়ার দেয়ার ব্যবস্থা করি এবং আমার বন্ধু-বান্ধবদের খোঁজ নেওয়ার জন্য বলি। অবশেষে আমরা খবর পাই।’
স্থানীয় দুই তরুণের সহায়তায় উজ্জ্বলের ছবি দেখে গত মঙ্গলবার বিকেলে ছেলের পরিচয় নিশ্চিত করেন মা-বাবা।
পরে বুধবার ছেলেকে নিতে আসেন তার বাবা-মা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে দুপুর ১২টায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছেলেকে সাথে নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা উজ্জ্বলের মা-বাবা।