ভারতকে যদি কেউ হারাতে পারে সেটা বাংলাদেশ- ম্যাচের আগে শিষ্যদের এ মন্ত্রেই উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিলেন গোলাম রব্বানী ছোটন। কিন্তু মুখের মন্ত্র আর মাঠে সেটা বাস্তবায়ন যে ভিন্ন দুই বিষয় তা সাবিনা-মারিয়াদের হাড়েহাড়ে বুঝিয়ে দিল ভারতের মেয়েরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের অপরাজেয় থাকা সংখ্যাটা দশে টেনে নিয়ে উঠে গেছে ফাইনালেও।
বাংলাদেশের দুর্বল রক্ষণের ফাঁক-ফোকরগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেছে ভারত। গতবারের রানার্সআপদের বিপক্ষে সাফের টানা চার শিরোপাজয়ী দলটির জয় ৩-০ গোলের।
শুক্রবারের ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ নেপাল। বুধবারের প্রথম ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে নিজেদের চতুর্থ সাফ ফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা।
ভারতের বিপক্ষে আগের নয় দেখায় কখনোই জয় না পাওয়ার ইতিহাস ভাঙতে চার ফরোয়ার্ডকে রঙ্গশালার ম্যাচে নামিয়েছিলেন বাংলাদেশ কোচ ছোটন। চোটের কারণে গ্রুপ পর্বে খেলতে না পারা ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রাণী সরকারও ছিলেন মূল একাদশে। কিন্তু রক্ষণের দুর্বলতায় ম্যাচ শেষে সবকিছু হয়ে গেছে ম্লান।
ম্যাচের শুরুর প্রথম ১৫ মিনিট ভারতের মেয়েদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ১৮ মিনিটে কর্নার থেকে আসা বল জটলার মধ্যে পেয়ে তা কাজে লাগিয়ে ভারত পিছিয়ে দেয় সাবিনা খাতুনদের।
প্রথম গোলে বাংলাদেশি ডিফেন্ডার আর গোলরক্ষক রুপনা চাকমার ভুল ছিল চোখে লাগার মতো। ২৩ মিনিটে ভারতের দ্বিতীয় গোলও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে লাল-সবুজ রক্ষণের গলদগুলো। সমতা ফেরানোর নেশায় রক্ষণ ছেড়ে উপরে উঠে গিয়েছিলেন বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা। সুযোগে পাল্টা আক্রমণে রুপনা চাকমাকে বোকা বানিয়ে বল জালে জড়ায় ভারত।
নেপাল ম্যাচে হারের পর প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সঠিকভাবে মার্কিং করতে না পারাকেই দোষ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ কোচ ছোটন। সেই সমস্যা যে শোধরানো যায়নি ভারতের প্রতিটি আক্রমণেই তা চোখে পড়েছে। ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ম্যাচে তৃতীয়বারের মতো গোল করে ভারত।
দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ সামলে বাংলাদেশের উপরে উঠে খেলার চেষ্টা থাকলেও সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে গেছে প্রথমার্ধেই। বারকয়েক আক্রমণে বাংলাদেশের প্রতিটা প্রচেষ্টা ছিল দুর্বল। বরং ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে আরেকটি গোল হজম করে একহালি ব্যবধানের হার নিয়েই এবারের সাফ মিশন শেষ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।