কুখ্যাত আলবদর প্রধান ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর দাফন
তার গ্রামের বাড়িতে সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে পাবনার সাঁথিয়া
উপজেলার মনমথপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে নিজামীকে দাফন করা হয়।
জামায়াতে ইসলামীর প্রধান এ নেতাকে যে তিনটি ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়; তার দুটিই ছিলো সাঁথিয়ায়। এর একটি ঘটনায় বাউশগাড়ি, ডেমরা ও রূপসী
গ্রামের প্রায় ৪৫০ জন মানুষকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করে। আর ৩০-৪০ জন
নারীকে ধর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা।
অন্য ঘটনায় নিজামীর নির্দেশে ধুলাউড়ি গ্রামে
মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে যেয়ে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার বাহিনীর
সদস্যরা ডা. আব্দুল আউয়াল ও তার আশেপাশের বাড়িতে হামলা
চালিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৫২ জনকে হত্যা করে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে
গণহত্যা, হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর করার পর
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তার মরদেহ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে
পৌঁছান বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে।
ধোপাদহ ইউনিয়নের ওই গ্রামে আগে থেকেই প্রশাসনের সহযোগিতায় কবর খুড়ে রাখা হয়েছিলো। নিজামীর মরদেহ আসার পর মনমথপুর মাদরাসা মাঠে জানাজা পড়ান তার ভাতিজি জামাই আতাইকুলার সড়াডাঙ্গি মাদরাসার শিক্ষক ক্বারি আহম্মদুল্লাহ। এরপর দ্রুতই তাকে দাফন করা হয়।
ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগেই নিজামীর গ্রামের বাড়ির ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হন।
পুরো এলাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সন্দেহজনক কাউকে চোখে পড়লে তাদের দেহ তল্লাসী করা হয়।
পাবনা জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর কবির জানান, নিজামীর ফাঁসি নিয়ে যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশ দিয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
রাত ১২টা ১০ মিনিটে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে একাত্তরের এই শীর্ষ অপরাধীর প্রাণদণ্ড কার্যকরা হয়।