পাঁচদিনের টেস্ট শেষ হল চারদিনে। যেখানে তিনদিনই রাজত্ব করে বোলাররা। মাঝের যে একদিন ব্যাটম্যানরা দাপট দেখিয়েছিল, সেই তৃতীয়দিন জয়ের আশা উজ্জ্বল করেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু চতুর্থদিন আবার বোলাররা স্বরূপে ফেরায় ফিকে হয়ে যায় ইংলিশদের স্বপ্ন। রাবাদা-নর্টজেদের সামনে টিকতে না পেরে জো রুটের দল হারে ১০৭ রানে।
সিরিজ শুরুর আগে নিজেদের খ্যাপা মহিষ দাবি করেছিল সাউথ আফ্রিকা। তারা বলেছিল, ইংল্যান্ড সিংহ হলে তারা খ্যাপা মহিষ। তাই ছেড়ে কথা বলবে না। কথা মতো, সেই খ্যাপা মহিষের কাছেই হারল সিংহরা।
দ্বিতীয়দিনেই দারুণ জমে উঠেছিল ইংল্যান্ড-সাউথ আফ্রিকার বক্সিং-ডে টেস্ট। যেখানে ভেল্কি দেখান দুই দলের পেসাররা। সেখানে তৃতীয়দিনে এসে উল্টো ভেলকি দেখান ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের ররি বার্নস। প্রোটিয়াদের প্রতিরোধ করে ইংলিশদের জয়ের আশাও জাগিয়েছিলেন এই ওপেনার।
প্রথম ইনিংসে ২৮৪ রানে অলআউট হয় সাউথ আফ্রিকা। ইংল্যান্ড সেখানে প্রথম ইনিংসে তেমন কোনো প্রতিরোধই করতে পারেনি। ১৮১ রানে অলআউট হয়ে যান জো রুটরা।
দ্বিতীয়দিন শেষে বলা হচ্ছিল, যদি আড়াইশো রানের লিডও সাউথ আফ্রিকা ইংল্যান্ডের সামনে রাখতে পারে, তাহলেই রুটদের কাজ ভয়ঙ্কর কঠিন হয়ে যাবে। কারণ ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে হবে চতুর্থ ইনিংসে। তার ওপর স্বাগতিক পেসাররা যে গতিতে বল করছেন, তাতে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের বড় চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হবে।
কিন্তু ৩৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে উল্টো চিত্রই তুলে ধরেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার। জুটিতে তোলেন ৯২ রান। ২৯ রানে ডম শিবলি কেশব মহারাজের শিকার হলেও ইংলিশদের জয়ের আশা দিতে থাকেন বার্নস। ৭৭ রানে অপরাজিত থেকে তৃতীয়দিন শেষ করেন। ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন তার সঙ্গী জো ডেনলি। তৃতীয়দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল এক উইকেটে ১২১ রান। বাকি দুদিনে তাদের করতে হত ২৫৫ রান। হাতে ৯টি উইকেট।
তবে চতুর্থদিনের শুরুতে আগের দিনের রেশ ধরে রাখতে পারেননি ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। আগেরদিনের ৭৭ রানের সঙ্গে আর মাত্র ৭ রান যোগ হতেই আউট হন বার্নস। তার ৮৪ রাই দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর। নিজের স্কোর বোর্ডে ২১ রান করে ফেরেন ডেনলি (৩১)।
মাঝখানে রুট ছাড়া দলকে ভরসা দিতে পারেননি কেউই। ৪৮ রানে আউট হন ইংলিশ অধিনায়ক। একে একে হতাশ করে ফেরেন বেন স্টোকস (১৪), জনি বেয়ারস্টো (৯), জস বাটলার (২২) ও স্যাম কারেন (৯)। মিডলঅর্ডার গুড়িয়ে যাওয়ার পর ইংলিশদের লেজ গুটিয়ে দিতে সময় নেয়নি প্রোটিয়া বোলাররা। ২৬৮ রানেই সফরকারীদের প্যাকেট করে ১০৭ রানের জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
কাগিসো রাবাদা ৪টি, নর্টজে তিনটি ও কেশব মহারাজ দুটি উইকেট নেন।
প্রথম ইনিংসে ৯৫ রান করে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করা কুইনটন ডি কক হয়েছেন ম্যাচসেরা। দুদলের চার টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয়টি শুরু হবে ৩ জানুয়ারি থেকে, কেপটাউনে।