মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি’র সঙ্গে আলোচনায় মানবাধিকার ইস্যুতে কথা তুলবেন বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল।
আসিয়ান-এর বিশেষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে শুক্রবার থেকেই অস্ট্রেলিয়ায় আছেন সু চি। সোমবার ক্যানবেরায় পৌঁছান তিনি। সেখানে সু চি’কে সামরিক গার্ড অব অনার দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হবে। এরপর ক্যানবেরাতেই টার্নবুলের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
ওই বৈঠকেই টার্নবুল রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবাধিকার প্রেক্ষাপটে সু চি’র সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
সম্মেলনের জন্য সিডনিতে থাকা অবস্থায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা নির্যাতন ও এ ঘটনায় নোবেল বিজয়ী সু চি’র নীরব থাকার প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিডনির রাজপথ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণও সিডনির রাস্তায় সু চি’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।
গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টে অং সান সু চি’র বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রাইভেট প্রসিকিউশনের আবেদন দাখিল করেন মেলবোর্নের পাঁচজন আইনজীবীর একটি দল।
মামলার আবেদনপত্রে সু চি’র বিরুদ্ধে মিয়ানমারের একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীর (রোহিঙ্গা) বিরুদ্ধে মানবতা লঙ্ঘনকারী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তাদেরকে জোরপূর্বক নিজ বাসভূমি থেকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়।
অং সান সু চি তার অবস্থান ও ক্ষমতা ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং এ কারণেই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীকে তিনি রোহিঙ্গাদের আবাস থেকে উৎখাত করার অনুমতি দিয়েছেন – এই অভিযোগ থেকে মামলার আবেদন করা হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়ায় সর্বজনীন বিচার ব্যবস্থার অধীনে কোনো মামলা করতে হলে অ্যাটর্নি জেনারেলের সম্মতি প্রয়োজন। এ কারণে শুক্রবারই অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টারের কার্যালয় বরাবর আনুষ্ঠানিক আবেদন পাঠানো হয়।
কিন্তু পোর্টার রোববার ওই আবেদনে সম্মতি জানাতে অস্বীকার করে বলেন, সু চি’র বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা যাবে না। তাকে গ্রেপ্তার বা আটক রাখা যাবে না। এমনকি আদালতের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়া যাবে না।
কারণ হিসেবে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো দেশের পক্ষ থেকে করা অপরাধের অভিযোগে মামলা বা আইনি প্রক্রিয়া চালানো নিষিদ্ধ। এই আইন কোনোভাবেই অমান্য করা সম্ভব নয়।
অ্যাটর্নি জেনারেলের অসম্মতি প্রকাশের কারণে মামলার আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়।