চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

সুশান্ত ছিল ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’: ছোটবেলার বন্ধুর স্মৃতিচারণ

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না তার ভক্তরা। একই অবস্থা তার স্কুলের সহপাঠীদেরও। তাদের মতে সুশান্ত আত্মহত্যা করার মতো ছেলে না। সুশান্তকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তার ছোটবেলার বান্ধবী আরতি বাতরা দুয়া।

পাটনার সেন্ট কারেনস হাই স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর ২০০১ সালে সুশান্ত আসেন দিল্লিতে। কুলাচি হংসরাজ মডেল স্কুলে তিনি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। এখানেই তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় আরতির।

সুশান্তের স্মৃতিচারণ করে আরতি বলেন, “একাদশ শ্রেণীতে সুশান্তের সঙ্গে পরিচয়। নতুন ছাত্র হিসেবে এসেছিল। একেবারেই আলাদা ছিল। আমরা ভালো বন্ধু হয়ে যাই। অনেক মজার মানুষ ছিল। পড়াশোনায় খুব সিরিয়াস, কিন্তু সব কিছু হালকা ভাবে নিত। আবার ফাঁকিবাজও ছিল না। কিন্তু মানসিক চাপ নিত না কখনো। সুশান্ত ছিল ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’। ভালো ছাত্র। সৃজনশীল। শিক্ষকদের পছন্দের। অলরাউন্ডার ছিল।

স্কুলের শেষ দিনে সুশান্ত মজা করে অটোগ্রাফ দিয়েছিল। বলেছিল, ‘রেখে দাও, পরে যদি লাইনে দাঁড়িয়েও না পাও’। সেটা ছিল আমাদের ফেয়ারওয়েলের দিন। আমার মন খারাপ ছিল।

আমরা একসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য কোচিং করতাম। কোচিং সেন্টারে একদিন পরীক্ষা হচ্ছে। খয়েরি রঙের খামে ভরে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। সুশান্ত আমার প্রশ্নপত্রের উপর মজা করে লেখে, ‘ অনেক ভালোবাসা, সুশান্ত।’ আমার প্রশ্নের খামে লেখালেখি করায় আমি রেগে যাই। বলি, ‘তোমারটা দাও, আমারটা নিয়ে নাও।’ সুশান্ত পরে মজা করে বলে, ‘রেখে দাও, পরে যদি লাইনে দাঁড়িয়েও না পাও।’ আসলেই ও নিজেকে সেই পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। তাকে নিয়ে গর্ব হয়। আমার কাছে এখনও সেই খয়েরি রঙের খামটি আছে। সুশান্তের স্মৃতি এটি।”

আরতি জানান, মায়ের মৃত্যুর পরে খুব ভেঙে পড়েছিলেন সুশান্ত। সেবছর দিল্লি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এ চান্স পাননি তিনি। কিন্তু এরপর যেন তার মনে জেদ চেপে যায়। দিনরাত পড়াশোনা করে পরের বছর চান্স পান তিনি। এসবের মাঝে হুট করেই একদিন সুশান্ত জানান, তিনি অভিনয় করবেন।

আরতির মতে, সুশান্ত সবসময় সংখ্যা নয়, মানে বিশ্বাসী ছিলেন। তার অনেক বন্ধু ছিল না, যারা ছিল তারা খুব কাছের ছিল। স্কুলের পরে শুধু তার সঙ্গে এবং আরেক বন্ধু নব্যের সঙ্গে সুশান্তের যোগাযোগ ছিল।

আরতি বলেন, ‘মনে আছে যখন ও অভিনয় শুরুর আগে শ্যামক দাভারের নাচের ক্লাসে যাওয়া শুরু করল। ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে নাচার সুযোগ পেল। খুশি হয়ে আমাকে ফোন করে জানিয়েছিল।’

বিষণ্ণতার কারণে আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত, এই বিষয়টি মানতে পারছেন না আরতি। তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি কিছুতেই ভাবতে পারছিনা যে সুশান্ত এরকম কোনো কাজ করেছে। বিশ্বাস হয়না। ও অনেক ইতিবাচক মানুষ ছিল।’

আফসোস করে আরতি বলেছেন, ‘শুধু মনে হচ্ছে যদি আরও বেশি করে ওর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম। খুব মিস করছি ওকে। ওর কাজ দিয়েই মানুষ মনে রাখুক ওকে। ‘