ব্যাট-বলের সঙ্গে দেশের ক্রিকেটারদের ভালোবাসা সবার জানা, বাইশ গজের বাইরেও তারকা ক্রিকেটারদের রয়েছে মিষ্টি প্রেমের গল্প। মাঠে চার-ছয়ে সেঞ্চুরি আর প্রতিপক্ষের উইকেট ভেঙে দেশবাসীর ভালোবাসা অর্জন করলেও নিজেদের জীবনে দু’জনের বিশ্বাস আর ভালোবাসায় জীবনের খেলায় তারা সফল।
নিজেদের ভালোবাসার মধুর কাব্যও নিজেদের মতো করে গড়ে নিয়েছেন তারা। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে আলাপচারিতায় উঠে এসেছে সেসব মিষ্টির প্রেমের গল্প।
হাবিবুল বাশার-শাওন: খুব অল্প বয়স থেকেই প্রেম করেছেন হাবিবুল বাশার সুমন। ক্লাস এইটে পড়ুয়া শাওনের সঙ্গে মনের আদান-প্রদান হয় ইন্টারমিডিয়েট পড়ুয়া কিশোরের। স্কুল-কলেজ পালিয়ে চলে দুরন্ত প্রেম। কুষ্টিয়ায় থাকা অবস্থায় চুটিয়ে প্রেম করলেও খেলার জন্য সুমন যখন ঢাকায় চলে আসলেন, তখন প্রেমে দুরত্ব বেড়ে গেলো তাদের। তবে মনের মানুষকে না জানিয়ে ঢাকায় খেলাও দেখতে আসতেন কিশোরী শাওন।
ছবি: রতন গোমেজ (বিসিবি)
সেইসময় না ছিলো ফেসবুক, না ছিলো ফোনের ব্যবহার। এক বন্ধুর মাধ্যমে চিঠির আদান-প্রদানের মাধ্যমে চলতো মিষ্টি প্রেম। তবে এতো দূরত্ব মেনে নিতে পারছিলেন না কেউই। তাই প্রেমের ঠিক দুই বছরেরে মাথায় বিয়ের পর্ব সেরে ফেলেন হাবিবুল বাশার সুমন ও শাওন। দীর্ঘ ভালোবাসার সংসারে রয়েছে দুই ছেলে। কাজের জন্য তেমনভাবে ভালোবাসা দিবস পালন করতে না পারলেও রাতের ডিনারটা একসঙ্গে করেন তারা। সুমন এখন সরাসরি ক্রিকেট না খেললেও দাম্পত্য জীবনের ইংনিস টেনে যাচ্ছেন পার্টনার শাওনের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায়।
মাশরাফি-সুমনা: ছোট্ট শহরে পাশেই ছোটবেলা কেটেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার। নড়াইলের মেয়ে ও নড়াইলের ছেলে। ছোটবেলা থেকেই জানাশোনা। তবে মন দেওয়া-নেওয়ার পর্বটা শুরু হয় কলেজে পড়ার সময়। এলাকার কারো অজানা ছিল না মাশরাফি ও সুমির প্রেমকাহিনী। সাদা মনের মাশরাফির প্রতিভার বিকাশ হতে সময় লাগেনি মোটেও। বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েই হলেন বড় তারকা।
গ্রামের মানুষের সন্দেহ জন্মাল তাদের সর্ম্পক নিয়ে। সুমির বাবাকে প্রতিবেশীরা বোঝাতে চাইলেন, তার মেয়েকে বিয়ে করবেন না মাশরাফি। ‘ও এখন বড় তারকা’ প্রতিবেশীদের এমন কথায় মাশরাফির বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হন সুমির বাবা। রাজি হয়ে যান দু’জনেই। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে বিয়ে হয় তাদের। তবে কে প্রথম প্রেম নিবেদন করেছিলেন, সেটি অবশ্য রহস্যের মধ্যেই রেখে দিয়েছেন মাশরাফি। সুখী এ দম্পতির ঘর আলো করে করেছে মেয়ে হুমাইরা ও ছেলে।
সাকিব-শিশির: বলা হয় ক্রিকেটটা সাকিবের সঙ্গেই চেনা শুরু করেছিলেন শিশির। এর আগে ক্রিকেটে তার খুব একটা আগ্রহ ছিলো না বলেই চলে। সে সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দলনেতাকে পছন্দ করতেন শিশির। তাইতো নিজ থেকেই সাকিব আল হাসানকে ফেসবুকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন শিশির। কতজনই তো তাকে আমন্ত্রণ জানান। সাকিব ভেবেছিলেন হয়তো এটা কোনো ফেক অ্যাকাউন্ট।
তবুও কৌতুহলবশত খুলে দেখে তারপর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। এরপর চলতে থাকে চ্যাটিং। ভাবের আদান-প্রদান। হয়তো মন দেওয়া-নেওয়াও হয়ে যায় তখন। এরপর প্রথম দেখা লন্ডনে।
সাকিব তখন কাউন্টি খেলতে গিয়েছিলেন সে খেলা দেখতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটে এসেছিলেন শিশির। প্রেমের ষোলকলা পূর্ণ করে তারা সিদ্ধান্ত নেন ১২.১২.১২ বিশেষ এই দিনটিতে তারা এক হয়ে হবেন। সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে সাকিবের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শিশির। বর্তমানে ভালোবাসার ঘরে শাকিব ও শিশির দম্পতির রয়েছে একটি রাজকন্যা।