চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

সুন্দরবন রক্ষায় সমন্বিত বন ব্যবস্থাপনা গড়ার আহ্বান

ইকো টুরিজম্যের নামে সুন্দরবনের ভেতরে অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় শত বছরের পুরনো বন ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন করে একটি সমন্বিত বন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।

সম্প্রতি বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মী, বিশেষজ্ঞ এবং নীতিনির্ধারণী প্রতিনিধি দল ভারত অংশের সুন্দরবন পরিদর্শন করেন। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে দৈনিক ভোরের কাগজ কার্যালয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

জীব-বৈচিত্র্য আর অনিন্দ্য সৌন্দর্যে আধার প্রকৃতি সৃষ্ট ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন। দুই দেশ মিলে ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের এই বনভূমির ৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশ এবং বাকি ৪ হাজার কিলোমিটার ভারতে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানুষের বৈরি আচরণে সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য হুমকির মুখে।

বুয়েট শিক্ষক এবং বন বিশেষজ্ঞ ডক্টর আতিউর রহমান বলেন, সুন্দরবন রক্ষার উদ্যোগকে ভারত ও আমাদের দেশকে যৌথভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে।

সাংবাদিক জুলফিকার আলি মাণিক বলেন, কূটনৈতিক মাধ্যমে পানি পাওয়া নিয়ে এবং নদী বাঁচানো নিয়ে আমাদের যা করণীয় সেগুলো ঠিকভাবে করতে হবে। নদী ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে  করতে হবে।

সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আব্দুল মতিন সরকারকে একটি কোড অব কন্ডাক্ট করতে বলেন যেখানে পরিষ্কার করা থাকবে যে, সুন্দরবনে কয়জন ভিজিটর যেতে পারবেন, কয়জন ব্যবসায়ী যেতে পারবে ইত্যাদি। এতে করে সরকারও একটা আইনের ভেতর আসবে বলে তিনি মন্তব্য  করেন।

সুন্দরবনের অর্থনীতি, জীব-বৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার আলাদা সেল করে সমন্বিত কার্যক্রম চালানোরও পরামর্শ দেন বিশেজ্ঞরা।

আইইউসিএন কান্ট্রি ডিরেক্টর ডক্টর ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুন্দরবনে বনবিভাগের মাধ্যমে যে ব্যবস্থাপনা হয়ে থাকে এটি অনেক পুরোনো। এর আমূল পরিবর্তন হওয়া দরকার।

সুন্দরবন রক্ষায় নদীতে মিঠা পানির প্রবাহ ঠিক রাখার ওপর জোর দেন বিশেষজ্ঞরা। দু’দেশের যৌথ প্লাটফর্ম এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডক্টর হাসান মাহমুদ বলেন, দুই দেশ মিলে একটা প্ল্যাটফর্ম করার সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পেরেছি আমরা। এ সিদ্ধান্তের আলোকে ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে সরকারী পর্যায়ে যোগাযোগও শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।

পরবর্তী সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টা উপস্থাপন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সুন্দরবনের জন্য কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করা হবে।

সুন্দরবনে চলাচল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বনটিকে সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ও ভারতের তথ্য বিনিময়ে মিডিয়া সেল করার সুপারিশ উঠে আসে আলোচনায়।