সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, বনদস্যু ও কিছু অসাধু বনকর্মীদের সহযোগীতায় প্রায় সারা বছরই সুন্দরবনে নির্বিচারে বাঘ-হরিণসহ বন্যপ্রাণী শিকার চলছে। বাঘ-হরিন শিকার বন্ধে ৩০টি শিকারী চক্রকে সনাক্ত করে তাদের সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বন বিভাগ।
বছরের অন্যান্য সময়ে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও প্রতি বছর ঈদ, রাশমেলা ও নববর্ষসহ বিশেষ ছুটির সময়ে বেড়ে যায় এদের দৌরাত্ম। তাই বনের নজরদারি বাড়াতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বনজ সম্পদ ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় স্থানীয় জনগণদের এগিয়ে আসার আহবান জানান খুলনা জেলার সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের ডিএফও জহির উদ্দিন আহমেদ।
জহির উদ্দিন বলেন, কিছু পেশাদার শিকারীদের তৎপরতা বন্ধ করতে কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় পুলিশ প্রশাসন রয়েছে।
সুন্দরবন রক্ষায় ইউএসএআইডি এর সহোযোগীতায় স্মার্ট পেট্রোলিং এবং কমিউনিটি পেট্রোলিং সিস্টেম চালু হয়েছে উল্লেখ করে বনসংরক্ষক সুনীল চন্দ্র কুন্ডু বলেন, স্মার্ট পেট্রোলিং সুন্দরবনের ভেতরে টহল করবে। আর কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ, সিপিজি সুন্দরবনের আশেপাশে যে সমস্ত লোকালয় আছে তার নজরদারি করবে।
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে বাঘ-হরিন শিকার বন্ধে সরকারি পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নানামত থাকলেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত কমিউনিটি পেট্রোলিং সিস্টেম কতটা কার্যকর হবে এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত সুন্দরবন গবেষনা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সরদার সফিকুল ইসলাম বলেন, শিকারীরা আর চোরা কারবারীরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের ছত্রচ্ছায়ায় তারা নিজেদের রক্ষা করে।
বাঘসহ সব ধরনের বন্যপ্রাণী রক্ষায় নির্দেশনা অনুযায়ী উপকুলবর্তী থানাগুলোর পুলিশ টহল জোরদারের পাশাপাশি যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, আমরা যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আইনি শৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোড়দাড় করার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা আমরা করছি।