ইন্দোনেশিয়ার আনাক ক্রাকাটাও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট সুনামির আঘাতে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত অন্তত ৩৭৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শনিবারের সুনামির শক্তিশালী জোড়া ঢেউয়ের ধাক্কায় আহত হয়েছে প্রায় দেড় হাজার মানুষ। নিখোঁজ রয়েছে অনেকেই।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থার মুখপাত্র সুতপো পুরয়ো নুগ্রহো আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ১৪৫৯ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে ১২৮ জন।
শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালিতে ভয়াবহ সুনামির সৃষ্টি হয়। পরপর দু’টো বিশাল ঢেউয়ের আঘাতে উপকূলবর্তী পান্ডেগলাং, সাউথ লাম্পাং এবং সেরাং এলাকায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার ক্রাকাটাও আগ্নেয়গিরি থেকে হঠাৎ করেই উদগীরণ শুরু হয়। ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড তীব্র মাত্রার অগ্ন্যুৎপাতে ছাই ও ধোঁয়ার মেঘ পাহাড়ের ওপর প্রায় ৪শ’ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
ওই অগ্ন্যুুৎপাতের ফলে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস হওয়ায় ভূমিকম্প থেকে সুনামির উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করছে দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা।
শুক্রবারের পর রোববারও আরেক দফা আগ্নেয়গিরি থেকে উদগীরণ হয়ে ছাই এবং ধোঁয়া ছড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। তাই নতুন আরেকটি সুনামির আশঙ্কায় আনাক ক্রাকাটাও আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি ও উপকূলবর্তী এলাকার লোকজনকে ইতোমধ্যে সমুদ্র সৈকত থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে।
সুতপো রোববার জাভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভূ-তত্ত্ব, আবহাওয়াবিজ্ঞান ও ভূ-পদার্থবিদ্যা সংস্থাগুলোর পরামর্শ, জনগণের আপাতত কিছুটা সময় সমুদ্র সৈকতসহ উপকূল থেকে দূরে থাকা উচিত।
‘নতুন করে সুনামি হওয়ার আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে। কারণ আনাক ক্রাকাটাও থেকে এখনো অগ্ন্যুদ্গীরণ হচ্ছে, যা যে কোনো সময় আরেকটা সুনামি ঘটাতে পারে,’ বলেন তিনি।
ধ্বংসস্তুপের নিচে কেউ জীবিত থাকতে পারে, এই আশায় উদ্ধারকর্মীরা জোর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সুনামির কারণে ধ্বংসস্তুপে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। তবুও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ভারী যন্ত্রপাতি পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে, যেন ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে লোকজনকে উদ্ধার করা যায়।