‘আর কোনো পৃথিবী নেই’, ‘জলবায়ু ন্যায়বিচার’ ইত্যাদি লেখা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভরত হাজারো সোচ্চার জনতা ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, লন্ডনের রাস্তায়। বিক্ষোভ করছে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি শিকার বাংলাদেশের মতো দেশগুলোও। এর মধ্যেই প্যারিসে শুরু হলো জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-টুয়েন্টিওয়ান’।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং দূষণ কমিয়ে আনতে এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের ১’শ ৯৫ টি দেশের প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিতে হাজির হয়েছেন বিশ্বনেতারাও।
১২ দিনের এই সম্মেলনে ভ্লাদিমির পুতিন, শি জিনপিং, বারাক ওবামা, ডেভিড ক্যামেরনসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর নেতারা দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনতে কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা জানতে মুখিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। সম্মেলনে বিশ্বনের্তৃবৃন্দ দূষণ কমানোর একটি আইনগত বাধ্যবাধকতার চুক্তিতে পৌঁছাবেন বলে আশা করছে বিশ্বগণমাধ্যম। জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হওয়া দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে হাজির হয়েছে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে।
বাংলাদেশ থেকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি এতে অংশ নিচ্ছেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউণ্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবুর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
প্যারিসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর শুরু হওয়া জলবায়ু সম্মেলনে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্মেলনস্থল ঘিরে অবস্থান নিয়েছে সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীরা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সম্মেলনকেন্দ্র সংলগ্ন রাস্তা। তবে বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, টিয়ার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
সংক্ষেপে কপ-টুয়েন্টিওয়ান:
কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ২০২০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের মধ্যে ধরে রাখার বিষয়ে বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহের মধ্যে একটি মতনৈক্য প্রতিষ্ঠার কঠিন চ্যালেঞ্চ নিয়ে শুরু হচ্ছে ২১ তম জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন।
বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন, নগরায়ন ও জিবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহারের কারণে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়ছে। যা আমাদের প্রতিবেশ, পরিবেশ ও জীবনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
তাপমাত্রা বাড়ার কারণে গলে যাচ্ছে মেরু অঞ্চলের বরফ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। এমনটা বাড়তে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ।
২০১১ সালে কোপেনহেগেনে কপ-২০ সম্মেলনে বলা হয়েছিল, ২০১৫ সালের মধ্যে জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় একটি সর্বস্মত চুক্তি হবে। সম্মেলন শুরুর আগে উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে মতৈক্যে আসাই কঠিন কাজ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।