অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হাতে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে নিখোঁজ ফটো সাংবাদিক ও ‘পক্ষকাল’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজল সর্বশেষ কোথায় অবস্থান করছিলেন তা চিহ্নিত করা হয়েছে।
সংস্থাটি যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, নিখোঁজের আগে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল সর্বশেষ রাজধানী ঢাকার হাতিরপুল এলাকায় তার অফিসের সামনে অবস্থান করছিলেন।
নিখোঁজ সাংবাদিককে দ্রুত খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি।
সাংবাদিক কাজল কোথায়, কী অবস্থায় আছেন তা শিগগির বের করতে এবং যদি রাষ্ট্রীয় হেফাজতে রাখা হয়ে থাকে তাহলে দেরি না করে তাকে মুক্তি দিতে কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান তিনি। সাদ হাম্মাদি বলেন: সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের সন্দেহজনক আচরণ স্পষ্টতই প্রমাণ করে কাজলের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্ত শুরুর মাত্র একদিন পরই তাকে অনুসরণ করা হচ্ছিল। ওই দিনের পর থেকেই আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
গত ১০ মার্চ বিকেল ৪টা ১৪ মিনিটে মোটরবাইকে শফিকুল ইসলাম কাজল হাতিরপুলে মেহের টাওয়ারে তার অফিসে পৌঁছান। এরপর বাইকটির আশপাশে বেশ কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। বিকাল ৫টা ৫৯ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটের মধ্যে তিনজন ব্যক্তি আলাদা আলাদাভাবে মোটরবাইকটির কাছে যায় এবং অযাচিত হস্তক্ষেপ করে। এরপর ৬টা ১৯ মিনিটে কাজলকে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে অফিস থেকে বের হয়ে নিজের বাইকের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়। পরে তিনি ফিরে আসেন এবং সন্ধ্যা ৬টা ৫১ মিনিটে একা বাইকে চড়ে চলে যান।
সেসময় তাকে সর্বশেষ দেখা যায় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বছর মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ অন্তত ৩৪ ব্যক্তির গুম হওয়ার অভিযোগ নথিবদ্ধ করেছে। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৮ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে, ১৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং বাকি ৯ জনের ভাগ্য কী ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি।
নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন ফেসবুকে ‘ভুল, আক্রমাণাত্মক ও অবমাননাকর’ বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।