চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

সিলেট কারাগারেই জঙ্গি রিপনের ফাঁসি কার্যকর হতে পারে

সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা চেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারেই কার্যকর হতে পারে। সিলেট কারা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সিলেট ‍টুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইতোমধ্যে রিভিউ খারিজের চূড়ান্ত রায় পড়ে শোনানো হয়েছে তাকে। এখন একমাত্র রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ আছে তার সামনে।

রিপন বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। জঙ্গি মুফতি হান্নানের এই ঘনিষ্ঠ সহচরকে কারাগারে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত কারাগারে রিপনের ফাঁসির আদেশের কোনও অনুলিপি এসে পৌঁছায়নি।

সোমবার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিউর আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। ফলে এবার অপেক্ষা কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার। জানা যাচ্ছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবে আসামীরা।আর রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষা না দিলে ফাঁসিতেই ঝুলতে হবে এই তিন জঙ্গিকে।

এদের মধ্যে মুফতি আব্দুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুল রয়েছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘জঙ্গি হান্নানের অন্যতম সহেযোগী দেলোয়ার হোসেন রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য একটি সেলে আটকে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কারাগারে তার ফাঁসির আদেশের কোনও অনুলিপি আসেনি। তবে আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে। আশা করছি বুধবার (২২ মার্চ) আমাদের কাছে আদেশের কাগজপত্র এসে পৌঁছাবে।’

তবে সিলেট কারাগারে রিপনের মৃত্যুদন্ড কার্যকরের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান তিনি।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।

ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাই কোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুন রায় হাতে পাওয়ার পর ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করে।

আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ  হয়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামিরা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। রোববার (১৯ মার্চ) দেওয়া রিভিউ খারিজের রায় মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়।