চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সিরিয়া ইস্যুতে ইউরোপে ‘যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব’

সিরিয়ায় ‘বিরোধী পক্ষ এবং বেসামরিক নাগরিকদের’ উপর বিমান হামলা বন্ধ করতে রাশিয়াকে সতর্ক করেছে উত্তর আটলান্টিক দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো। সিরিয়ার সরকারকে সাহায্য করতে মস্কোর বিমান আক্রমণ চালানোর কয়েকদিন পর ন্যাটো এমন সতর্কবার্তা উচ্চারণ করলো।

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেসামরিক নাগরিকের উপর হামলা ও মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

ন্যাটো ছাড়াও তুরস্কের আকাশসীমায় রাশিয়ান বিমানের অনুপ্রবেশের ঘটনায় তুরস্কসহ ন্যাটোর ২৮টি সদস্য দেশ একটি বিবৃতিতে এই ধরনের `দায়িত্বহীন আচরণের চরম বিপদ’ সম্পর্কে রাশিয়াকে সতর্ক করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তুরস্ককে উস্কানি দিয়ে বলেছেন, তাদের আকাশপথে অনুপ্রবেশকারী জেট বিমানকে গুলি করে অবতরণ করানোর অধিকার তাদের রয়েছে।

দ্বিতীয়বারের মতো রোববারেও তুরস্কের আকাশসীমায় রাশিয়ার যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের ঘটনায় তুরস্কে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে রোববারের ঘটনায় কোন মন্তব্য করেনি রাশিয়া।

এর আগে শনিবার তুরস্কের আকাশ সীমানায় রাশিয়ার একটি বিমান অনুপ্রবেশ করলে তাকে ফেরাতে তুরস্ক একটি এফ-১৬ ফাইটার জেট প্লেন পাঠায়। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের হাতাই প্রদেশের ইয়াইলাদাগি এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছিলো বলে তুরস্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তবে রাশিয়া বলছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণেই মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য লঙ্ঘনে ঘটনা ঘটেছিলো। তবে সীমান্তে দেশটির টহল বিমান রোববারও একটি অজ্ঞাত বিমানের উপস্থিতি লক্ষ্য করে বলে তুরস্ক জানায়।

এই ঘটনার ‘কঠোর প্রতিবাদ’ জানাতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছিলো বলে রাজধানী তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলু দেশটির একটি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, টার্কিশ সশস্ত্র বাহিনীর স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এবং একটি উড়ন্ত পাখিকেও তারা তাদের সীমানায় থামাবে। তবে তুরস্ক এবং রাশিয়ার মধ্যকার সংকটের কোন সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যকার আকাশপথ উন্মুক্ত থাকবে।

তবে আইএসের অবস্থান লক্ষ্য করে রাশিয়া বিমান হামলা চালাচ্ছে না উল্লেখ করে ন্যাটো রাশিয়ার দাবি করা ‘প্রচেষ্টার প্রতি নজর’ দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করে। ন্যাটোর এই মন্তব্যের পরাপ্রেক্ষিতে রাশিয়া এখনও কোন সাড়া দেয়নি।

তবে সোমবারে রাশিয়ান সরকারের প্রতিরক্ষা কমিটির প্রধান ভ্লাদিমির কোমোয়েদোভ বিদ্রোহী অবস্থানে হামলার জন্য যুদ্ধজাহাজ প্রেরণের সম্ভাবনা বাতিল করেননি বলে জানান। রাশিয়ার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আরআইএ ভ্লাদিমিরকে উদ্ধৃত করে বলেছে, যুদ্ধ জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে।কিন্তু বিদ্রোহীরা সমুদ্রসীমা হতে বেশ দূরে দেশটির অভ্যন্তরভাগে থাকায় এই আসন্ন হামলাটি অসম্ভব বলেও জানানো হয়।

মস্কোভিত্তিক বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স সূত্রে জানা যায়, রাশিয়ার আরও দুটি সামরিক জাহাজ পুর্ব ভূমধ্যসাগরের পথে রয়েছে।

সিরিয়ায় সোমবারের বিমান হামলা সম্পর্কে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ১৫ টি বিমান হামলায় ১০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে জঙ্গিদের দখল করা ২০টি ট্যাঙ্ক, দামাস্কাস এবং আলেপ্পোতে আইএসের দুটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং হোমস প্রদেশের দুটি গোলবারুদ মজুদ কেন্দ্র।

বুধবার শুরু হওয়া রাশিয়ার বিমান অভিযানের ব্যাপারে মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং ইসলামি জঙ্গি দলগুলোকে লক্ষ্য করে তাদের হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট এবং তুরস্কেরর দাবি, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিরোধী দল রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তু।