সিলেট থেকে: ব্যাট হাতে আবারও শাই হোপের প্রতিরোধ। একপ্রান্ত আগলে পুরো ৫০ ওভার লড়লেন উইন্ডিজ ওপেনার। অপরাজিত থেকে করলেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তবে অন্যপ্রান্ত ছিল বেশ নড়বড়ে। অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের জ্বলে ওঠার দিনে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নাগালেই আছে বাংলাদেশের লক্ষ্য।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ওয়ানডে অভিষেকের মঞ্চে টস জিতে বোলিং বেছে নেয়া মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দল উইন্ডিজকে আটকে ফেলেছে দুইশর মধ্যেই। সিরিজ জিততে বাংলাদেশের করতে হবে ১৯৯ রান।
১০৮ রান করে অপরাজিত থাকেন হোপ। মিরপুরে আগের ম্যাচে ১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে সিরিজে সমতা (১-১) আনেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ক্যারিবীয়দের বাতিঘর হয়ে জ্বললেন চায়ের শহরে এসেও।
সাকিব আল হাসানকে সোজা ব্যাটে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা হোপ ৯ চার ও এক ছক্কায় তিন অঙ্কে পৌঁছান ১২১ বল মোকাবেলায়। অপরাজিত ইনিংসটি সাজান ১৩১ বলে।
বেলা ১২টায় শুরু হওয়া দিবা-রাত্রির ম্যাচে দর্শকের জোয়ার বইতে শুরু করে দুপুরের পর। ছুটির দিনে গ্যালারিত তারা থিতু হওয়ার আগেই অবশ্য বল হাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বাংলাদেশ।
নতুন বল হাতে পেয়ে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের উপর ছড়ি ঘোরান মিরাজ। সাজঘরে পাঠান প্রথমসারির চার ব্যাটসম্যানকে। ২৬তম ওভারেই বোলিং কোটা পূর্ণ করেছেন। ১০ ওভারে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ২৯ রানে ৪ উইকেট নেন এ অফস্পিনার। গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৬ রানে ৩ উইকেট ছিল আগের সেরা।
মিরাজ প্রথম দুই ব্যাটসম্যানকেই ফেরান সাজঘরে। বাঁহাতি ওপেনার চন্দরপল হেমরাজকে (৯) ফিরিয়ে হানেন প্রথম আঘাত। উইন্ডিজের দলীয় রান তখন ১৫। হোপের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়া ড্যারেন ব্রাভো (১০) ফেরেন বোল্ড হয়ে।
উইন্ডিজ ডেরায় তৃতীয় আঘাত রুবেল হোসেনের জায়গায় একাদশে আসা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। ক্যারিবীয়রা যখন শতরানের কাছে তখন মারলন স্যামুয়েলস (১৯) বোল্ড হন তরুণ পেসারের বলে। ইনসুইংয়ের মুখে জায়গায় দাঁড়িয়ে লংঅন দিয়ে তুলে মারতে চেয়েছিলেন স্যামুয়েলস। ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে স্টাম্প উপড়ে যান এ ডানহাতির।
পরের ওভারেই নিজের তৃতীয় সাফল্যের দেখা পান মিরাজ। এ অফস্পিনারের ‘বানি’ বনে যাওয়া শিমরন হেটমায়ার এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকে সাজঘরে পাঠিয়ে প্রথমবার ৪ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন মিরাজ।
৯৬ থেকে ৯৯- ৩ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারালে দিশেহারা হয়ে পড়ে ওয়েস্ট উন্ডিজ।
হোপের সঙ্গে রোস্টন চেজ জুটি গড়ে বিপর্যয় কিছুটা সামাল দেন। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৩৬ রান যোগ করে চেজ(৮) ফেরেন সাকিবের প্রথম শিকার হয়ে। পরে এ বাঁহাতি স্পিনার ফেরান ফাবিয়ান অ্যালেনকে (৬)। কিমো পলকে (১২) বোল্ড করে অষ্টম আঘাত হানেন মাশরাফী।
খানিকপরে কেমার রোচকে (৩) এলবিডব্লিউ করেন দেশের হয়ে ২০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা নড়াইল এক্সপ্রেস। হোপ ও দেবেন্দ্র বিশু (৬*) দশম উইকেট জুটির অবিচ্ছিন্ন থেকে ২১ রান যোগ করলে দুইশর (১৯৮/৯) কাছে যায় সফরকারীরেদ পুঁজি।