তৈরি পোশাক প্রস্তত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও গবেষণামূলক কাজ করছে সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিজ (সিবাই)। তবে এই প্রশিক্ষণে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোও উপকৃত হচ্ছে। তাই তাদের উচিত সিবাইর কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারীতে আয়োজিত ব্র্যান্ড ফোরাম সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও বাংলাদেশ ও সিবাই।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে মধ্যম স্তরের দক্ষ জনবলের যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে সিবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শুধু তাই নয়, পোশাকের নতুন ফ্যাশন, ডিজাইন, মান নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা করছে সিবাই। যার মাধ্যমে তৈরি পোশাক খাত, বিদেশি ব্র্যান্ডসহ সংশ্লিষ্ট সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে। অতএব ব্র্যান্ডগুলোর উচিত সিবাইর সার্বিক কাজকে আরো গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেয়া।
তিনি আরও বলেন, পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার মাত্র ৬ শতাংশের মতো। যেখানে পোশাক খাত থেকে ধীরে ধীরে সরে আসা চীনের শেয়ার এখনও ৩৬ শতাংশ। তাই বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাকের রপ্তানি বাড়াতে গবেষণার মাধ্যমে পোশাকের মান উন্নত করার বিকল্প নেই। কিন্তু দু:খের বিষয় হচ্ছে, কিছু লোক বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের শ্রম নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই শিল্প।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। হিমায়িত খাদ্য, পাট, চামড়া ও পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে দেশের রপ্তানি বাড়ছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য ব্যবসায়ীরা এখনও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে ব্যবসা করছে।
এফবিসিসিআইর সভাপতি বলেন, চাহিদার তুলনায় গ্যাস-বিদ্যুতের স্বল্পতাসহ এখনও নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে বন্দরের জটিলতা আরো বেশি সমস্যা তৈরি করছে। এসব বাধা-বিপত্তির অবসান করা গেলে পোশাক খাত যেমনি এগুবে তেমনি এগুবে দেশের অর্থনীতিও।
বিজিএমইএর সাবেক ও সিবাইর বর্তমান সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, মধ্যম পর্যায়ে দক্ষ জনশক্তির যে ঘাটতি রয়েছে এবং ব্র্যান্ডদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাকের মান বাড়াতে অকল্পনীয় ভূমিকা রেখে আসছে সিবাই। এর অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে ইতিমধ্যে কয়েক হাজার দক্ষ কর্মী বিভিন্ন কারখানা চাকরি করছে। তবে সিবাইর এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। এসব কাঁচামাল আমদানিতে সরকারের আরো সহাতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সুইডেন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এইচ অ্যান্ড এম’র বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ম্যানেজার গোঠাতোঠি, আইএলওর পো্রগাম অফিসার খাদিজা খন্দকার ও সিবাইর সিইও আফতাব উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।