সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি পুলিশের চার সদস্য ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে র্যাবের একটি দল তাদের চার জনকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর এবং মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের আদালতে হাজির করে। পরে চার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে কনস্টেবল সাফানুল করিম ও কামাল হোসেনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং সহকারী উপ পরিদর্শক লিটন মিয়া ও কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুনকে তামান্না ফারাহ এর আদালতের খাস কামরায় নিয়ে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু করে।
বিকেল ৫টার দিকে তাদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হয়। এর আগে সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমের সাথে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র এ এস পি খায়রুল ইসলাম জানান, সিনহা হত্যা মামলায় ১৩ জন আসামির মধ্যে ১২ জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুধুমাত্র ২ নং আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়নি। এতে মামলা তদন্তে কোন বিঘ্ন ঘটবে না।
তিনি জানান, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা ঘটনার সবিস্তারে বর্ননা দিয়েছেন। আশা করি তারা আমাদের কাছে যা স্বীকার করেছেন আদালতেও তাই বলেছেন।
সিনহা হত্যা মামলায় আজ জবানবন্দি দেয়া সর্বশেষ চার আসামি হচ্ছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন।
র্যাব-১৫ কক্সবাজারের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ‘গত ২৪ আগস্ট সিনহা হত্যা মামলার আসামী পুলিশের চার সদস্যকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড মন্জুর করেছিল আদালত। আদালতের আদেশ পেয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশের চার সদস্যদের দ্বিতীয় দফা রিমান্ডের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে র্যাব। আজ বুধবার চার দিনের রিমান্ড শেষে তাদের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’
এর আগে উক্ত মামলায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলালকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে প্রদীপকে চার দফায় ১৫ দিন এবং লিয়াকত ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে তিন দফায় ১৪ দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়। লিয়াকত ও নন্দ দুলাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও প্রদীপ রাজি হননি। তারা সবাই এখন কারাগারে রয়েছেন। এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া এপিবিএন এর ৩ সদস্য এবং পুলিশের করা মামলার ৩ স্বাক্ষী সহ এপর্যন্ত ১২ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।