চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘সিনহা হত্যাকাণ্ডের দায় ব্যক্তির, কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়’

যৌথ বিফ্রিংয়ে সেনাপ্রধান ও আইজিপি

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ নিহতের ঘটনাটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। হত্যাকাণ্ডের দায় ব্যক্তির, কোনো প্রতিষ্ঠানের না। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কেউ ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করবেন না।

বুধবার বিকালে কক্সবাজার সৈকতে অবস্থিত সেনাবাহিনীর রেস্ট হাউস জলতরঙ্গের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘সিনহা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মধ্যে কোন ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, যে ঘটনাটি ঘটেছে এর জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান দায়ী হতে পারে না। তদন্ত কমিটি যাদের দোষী সাব্যস্ত করবে অবশ্যই তাদেরকে প্রায়শ্চিত্ত পেতে হবে। এজন্য কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের সহযোগিতা করবে না। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের কোন ধরণের ফাটল সৃষ্টি হবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদ বলেছেন, ‘টেকনাফে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটির কারণে দুই বাহিনীর মধ্যে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। বরং আমাদের লক্ষ্য হবে যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত যৌথ তদন্ত কমিটি হয়েছে তারা প্রভাবমুক্ত পরিবেশে তদন্ত করবে। তারা তদন্ত করে যে প্রতিবেদন দিবেন সে অনুযায়ী পরবর্তী আইনি কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং সেটাই গ্রহণ করা হবে।’

বেনজির আহমেদ আরও বলেন, ‘ঘটনাটিকে অনেকেই উষ্কানিমূলক কথা বার্তা বলছে। এসব বলে তারা সফল হতে পারবে না। কারণ সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে পরস্পর সম্পর্ক রয়েছে। যারা বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথা বলে দুই বাহিনীর মধ্যে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে তারা কখনও সফল হবে না। তাই দেশের স্বার্থে এ ধরণের কোন কথাবার্তা না বলার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এর আগে বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ বিমানবন্দর হয়ে কক্সবাজার সৈকতে অবস্থিত সেনাবাহিনীর রেস্ট হাউস জলতরঙ্গে এসে পৌঁছান।

এসময় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফের শামলাপুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে টেকনাফ থানা ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সহ ৯ জনকে আসামী করে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামান্না ফারাহ’র আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে টেকনাফ থানাকে এজাহার হিসাবে নথিভূক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে মামলাটি র‌্যাবকে তদন্ত করারও আদেশ দেয়া হয়েছে।

মামলায় আসামী করা হয়েছে টেকনাফ বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এসআই টুটুল, কনষ্টেবল মো: মোস্তফা। এরা সকলেই টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে ওইদিন রাতে কর্মরত ছিলেন।

গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।