দক্ষিণ কোরিয়ায় সিউলে অস্ট্রেলিয়ান এক নারীকে নেশাগ্রস্থ করে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় পুলিশের প্রতি দায়িত্ব এড়ানো ও ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনার শিকার হওয়া নারী সিউল পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জনমত গঠন ও নানা প্রচারমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।
ধর্ষণের শিকার হওয়া অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক এয়ারড্রে ম্যাটনার জানিয়েছেন, গত সেপ্টেম্বরে পরিকল্পিতভাবে একটি মদের দোকানে সে ওই পরিস্থিতির শিকার হন।
পুলিশের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ধর্ষিত হওয়ার পর পুলিশের কাছে গেলেও তারা যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি হাসপাতালে তারা প্রয়োজনীয় টেস্টও করেনি। আরো বড় পদক্ষেপের জন্য এখন ফান্ড সংগ্রহ করছেন ম্যাটনার।
সিউলের পুলিশ অবশ্য তার দাবিকে একপাক্ষিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পুলিশ বিষয়টির জন্য সরাসরি আঙুল তোলেন দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমের উপর। পুলিশের দাবি, ম্যাটনার সাংবাদিকদের কাছে যেসব তথ্য দিয়েছেন সেগুলো আগে পুলিশের কাছে দেওয়া তথ্যের থেকে ভিন্ন।
ঘটনার পরদিনই পুলিশসহ হাসপাতালে গেছিলেন ম্যাটনার। কিন্তু ম্যাটনারের মনে হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনার চেয়ে সে কতটা মদ খেয়েছে, তা নিয়েই বেশী কথা বলেছে সিউল পুলিশ। সে একা একা কেনো বাইরে গেছে, সেটাও ছিলো পুলিশের বিবেচনার বিষয়।
ম্যাটনার জানান, তিনি মাত্র তিনটি ড্রিংক করেছিলেন এবং তিনি আসক্ত ছিলেন না। হঠাৎ তিনি ভিন্নরকম অনুভব করেন। তার মদের সঙ্গে কিছু মিশ্রিত ছিলো। এরপর তার মনে পড়ে এক পুরুষের সঙ্গে তিনি ট্যাক্সিতে ভ্রমণ করছেন। ঘুম ভেঙে নিজেকে হোটেল রুমে নগ্ন আবিষ্কার করেন ম্যাটনার।
পরে পুলিশকে এক লোকের ছবিও পাঠান ম্যাটনার। যাকে ম্যাটনার সন্দেহের চোখে দেখেন। কিন্তু পুলিশ তাকে তো ধরে নি। বরং বলেছে, ওই সময়ে সে সিউলেই ছিলো না। অবশ্য এমন বক্তব্য উপেক্ষা করেই আসছে দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ।
ম্যাটনার এখন পুরো মামলাটি ব্রিটেনে নিতে চাইছেন। সেখানেই তিনি ন্যায়বিচার পাবেন বলে মনে করেন। সেজন্য ফান্ডও সংগ্রহ করছেন।
সম্প্রতি ধর্ষণ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশের বিরুদ্ধে ক্রমাগত এমন অভিযোগ দেখা যাচ্ছে। ম্যাটনার এই ঘটনা প্রকাশের পর আরও ১৬ জন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তারাও ধর্ষণ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় এমন অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চায়। আবার কেউ কেউ দোষ দিচ্ছেন ম্যাটনারকেই।
তবে শুধু দক্ষিণ কোরিয়াই নয়। সারাবিশ্বের মোট ৩৫ শতাংশ নারী রোজ রোজ নানা যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি জরীপ।