সংসদের ভেতরে ও বাইরে আলোচনা-সমালোচনার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ সংক্রান্ত বিল পাস হয়েছে।
বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে কণ্ঠ ভোটে পাস হয় ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল ২০২২’।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পর হতে যাওয়া নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত আইনের বিলটি এখন রাষ্ট্রপতির সইয়ের জন্য পাঠানো হবে। তার সইয়ের পর বিলটি আইনে রূপ নেবে। যে আইনের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে।
দীর্ঘ আলোচনার পর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিল সংসদে পাস করতে ভোটে দেন। এরপর কণ্ঠ ভোটে বিলটি পাস হয়।
এর আগে বিলটির তীব্র বিরোধীতা করেন জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা।
আইনটি প্রণয়নে তাড়াহুড়ো না করে তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানোর দাবি করেন সিলেট-২ আসনের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।
দেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত এই বিল সংসদে আনায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রতি ধন্যবাদ জানান জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। তবে ইসি গঠনে সার্চ কমিটিতে কোনো রাজনীতিক না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
মুজিবুল হক বলেন, ‘আপনাদের জন্ম সেনানিবাসে হয়নি। আপনারা স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাহলে কেন বিচারক ও আমলানির্ভর হলেন।’
সার্চ কমিটিতে আইন প্রণেতাদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান এই সাংসদ।
জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি’র এমপিরা বলেছেন, এটি যেন শেষ পর্যন্ত সরকারের নির্বাচন বিষয়ক আরেকটি মন্ত্রণালয় না হয়। সার্চ কমিটি গঠন এবং পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠনে সরকার আমলা এবং বিচারপতিদের ওপর কেন শতভাগ নির্ভর করছে সেই প্রশ্ন তোলেন তারা।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার দায় স্বীকার করে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইলেই কেবল বিএনপি’র সাথে ঐকমত্য হতে পারে।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ বিলে দুটি সংশোধনী দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরু হলে বিলটি পরীক্ষার পর এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।
এর আগে ২৩ জানুয়ারি সিইসি ও ইসি নিয়োগ বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।