একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরুর প্রাথমিক পর্ব থেকেই নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নিয়ে বিএনপি এবং তাদের নির্বাচনী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অভিযোগের সুরে কথা বলে আসলেও দিন দিন কমিশনের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড বাড়ছে। ইসির দাবি, এতে দেশব্যাপী ক্রমেই নির্বাচনী সুবাতাস বইতে শুরু করেছে।
গতকাল শুক্রবার বিএনপির অভিযোগ করেছিল সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার ওসি’র বিরুদ্ধে। নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ার অভিযোগ এনে কমিশনের কাছে তার পদত্যাগ চেয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী। নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে সেই ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে। নিঃসন্দেহে কমিশনের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। আমরাও নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
বিএনপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওসি এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বিএনপির অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনা, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ঠাকুরগাঁও সদর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় ইসি। একইদিন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সেবাস্টিন রেমাকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও ফরিদপুরের এডিসি সাইফুল হাসান প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়।
বলতে গেলে কিছু ঘটনা ছাড়া সারাদেশে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। বিএনপি মহাসচিব আজ শনিবারও দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। চ্যানেল আই অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ঢাকা-১১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শামীম আরা বেগম নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাচ্ছেন। একইভাবে দেশের অনেক আসনেই ইতোমধ্যে প্রচারণা জমে উঠেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এসব ঘটনাপ্রবাহ অবশ্যই ইতিবাচক খবর। দেশবাসীর মতো আমরাও সব দলের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ ও ভোটগ্রহণ চাই। যেসব এলাকায় এর বিপরীত চিত্র রয়েছে নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছায় সেখানেও নির্বাচনী পরিবেশ জমজমাট হয়ে উঠবে বলে আমরা আশা করি।
আজ শনিবার ময়মনসিংহে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা যে বক্তব্য রেখেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। তিনি বলেছেন: নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্টদের পেশাদারিত্ব ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি হিসেবে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করতে হবে। এছাড়া ভোটের দিনে ভোটাররা ভোট দিয়ে যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে সেদিকে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বিশেষভাবে সর্তক থাকতে হবে। তার এ বক্তব্যকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
আমরাও মনে করি, নিরপেক্ষভাবে যার যার দায়িত্ব পালন করলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে।