দুই বছর হলো টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় মুখ সালেহ আহমেদ নেই। ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন অসংখ্য দর্শকপ্রিয় নাটকের এই অভিনেতা।
তার মামাতো ভাই ও অভিনেতা আহসানুল হক মিনু চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, সালেহ আহমেদের মৃত্যুদিনে পরিবারে আরো এক শোক। করোনা পরবর্তী জটিলতায় মারা গেছেন গুণী নাট্য নির্দেশক তবিবুল ইসলাম বাবু। ফলে সালেহ আহমেদের জন্য পারিবারিকভাবে কোরান তেলাওয়াত ও দোয়ার আয়োজন হয়েছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সালেহ আহমেদের জন্ম। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে চাকরির পাশাপাশি ময়মনসিংহে অমরাবতী নাটমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই অভিনেতা। স্বাধীনতার আগে বিটিভিতে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতেন।
২০১১ সালে ব্রেন স্ট্রোক করেন সালেহ আহমেদ। এরপর থেকেই চুপ হয়ে যান এই অভিনেতা। তখন থেকেই মূলত পরিচিত গণ্ডিতে তার যাতায়াত কমতে থাকে। ছোট পর্দার মানুষের সাথে বাড়তে থাকে তার দূরত্ব। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগে প্রিয় নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুতে। ২০১২ সালে নির্মাণের মহান এই কারিগরের মৃত্যুতে মনে মনে সিদ্ধান্তই নিয়ে নেন, আর অভিনয় নয়!
মূলত, হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর অভিনয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন সালেহ আহমেদ। কারণ তার হাত ধরেই অভিনয়ে নাম লিখিয়ে ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে অবসরে যাওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদের নাটকে ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ধারাবাহিক ‘অয়োময়’ নাটক এবং ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে তার দাপুটে পদচারণা শুরু হয়েছিলো। এরপর অসংখ্য টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
এরপর দিনকে দিন একা হয়ে যেতে থাকেন সালেহ আহমেদ। সেই সাথে বার্ধক্য তাকে ঝাঁপটে ধরে। এরপর চলাফেরা তো দূরের কথা, ঠিকমতো উঠে বসতে পারাও কষ্টদায়ক ছিলো তার জন্য। এর পাশাপাশি তার ফুসফুস প্রদাহজনিত সমস্যাসহ বাত সমস্যা ছিলো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।
শেষ দিকে গুণী এই অভিনেতা দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কয়েক বছর বিছানায় শুয়েই কাটছিলো তার জীবন। সালেহ আহমেদের চিকিৎসায় খরচ হয়েছে মোটা অংকের টাকা। ২০১১ সালে স্ট্রোকের পর থেকে তার চিকিৎসার খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে শুরু করে তার পরিবার। তারপর এগিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।