সেমিফাইনালের প্রথম লেগ একপেশে বানিয়েই জিততে যাচ্ছিল লিভারপুল। কিন্তু রোমা দুই গোল ফিরিয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের আশাটা বাঁচিয়ে রাখল। যদিও ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে বড় পরীক্ষাই দিতে হবে তাদের। মঙ্গলবার রাতে লিভারপুল যে ৫-২ গোলের বড় ব্যবধানে জিতেই মাঠ ছেড়েছে।
অ্যানফিল্ডে বড় জয়ে জোড়া গোল করেছেন মোহাম্মেদ সালাহ ও রবের্তো ফিরমিনো, লিভারপুলের অন্য গোলটি সাদিও মানের। আর রোমার আশা বাঁচিয়ে রাখা মূল্যবান দুটি অ্যাওয়ে গোল এসেছে এডিন জেকো ও ডিয়েগো পেরোত্তির থেকে।
রোমা থেকেই লিভারপুলে নাম লিখিয়েছেন সালাহ। চলতি মৌসুমে উড়তে থাকা ইংলিশ দলটির অন্যতম ভরসাও। সাবেক দলের রক্ষণব্যুহ ভেদ করে মিশরীয় তারকা দারুণ ছন্দে থাকার সাক্ষর রাখলেন আরেকবার। প্রথম দুটি গোলই সালাহর মোহনীয় ম্যাজিকে এসেছে।
এগারো বছর ধরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের স্বাদ না পাওয়া লিভারপুল ১৯ মিনিটে বেঁচে যায় গোলরক্ষক ও বারের যৌথ প্রচেষ্টায়! অ্যালেকজান্ডার কোলারভের ২৩ গজী বুলেটশট গোলরক্ষক লোরিসের গ্লাভস ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে ফেরে।
এরপর ঘুরে দাঁড়ায় লিভারপুল। সাদিও মানে এসময় পরপর দুই মিনিটে দুটি সুযোগ হাতছাড়া করলে হতাশাও বাড়ছিল স্বাগতিকদের। ৩৫ মিনিটে কাটে সেই গুমোটভাব। ফিরমিনোর পাসে বাঁ-পায়ের কোনাকুনি শটে রোমার জাল খুঁজে নেন সালাহ।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে পাল্টা আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সালাহই। এবারও বলের যোগানদাতা ফিরমিনো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি সালাহর ১০তম গোল। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমের ৪৩তম।
মধ্যবিরতির পর ফিরে প্রতিপক্ষ রক্ষণে চাপটা ধরে রাখে লিভারপুল। ৫৬ মিনিটেই আসে তৃতীয় সাফল্য। এবার যোগানদাতা সালাহ, আর গোলদাতা সাদিও মানে।
পরের অংশটি ফিরমিনোর। ৬১ মিনিটে সালাহর ক্রসে ৪-০ করেন ফিরমিনো। সাত মিনিট পর মিলনারের কর্নারে মাথা ছুঁয়ে দলের পঞ্চম আর নিজের দ্বিতীয় গোলটি আনেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
ম্যাচটা যখন একপেশে শেষের অপেক্ষা, পাল্টা আক্রমণ হানে অতিথিরাও। এসময় চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল পায় রোমা। ৮১ মিনিটে বক্সের মধ্যে বুক দিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জাল খুঁজে নেন জেকো। আর ৮৫ মিনিটে পেনাল্টিতে দ্বিতীয় গোলটি আনেন পেরোত্তি। দুটি গোলেরই উৎস নাইনগোলান। জেকোর গোলের বল ক্রস করেছিলেন, পরে তার শটেই নিজ বক্সে হাতে বল লাগে মিলনারের, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
আসছে বুধবার রাতে দ্বিতীয় লেগ রোমার মাঠে। লিভারপুল অনেকটা এগিয়ে থেকেই নামবে। তবে কোয়ার্টারে বার্সেলোনার মাঠে বড় ব্যবধানে হেরেও ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর যে নজির গড়েছিল ইতালির দলটি, সেটিই বাঁচিয়ে রাখছে রোমাঞ্চ। মূল্যবান দুটি অ্যাওয়ে গোল তো তাতে রসদ হিসেবে থাকছেই।