সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন (সার্ক)-এর কার্যকারিতা হারানোর অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই আঞ্চলিক জোট ‘খুব ভালোভাবেই সক্রিয় আছে’।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে কংগ্রেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ৪৭তম বার্ষিক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ায় হারনিসিং রিজিওনাল কো-অপারেশন বিষয়ক একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
এ সেশনে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রেনিল উইক্রিমিসিঙ্গী, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রী নির্মলা সীতারামান ও সার্কভুক্ত বিভিন্ন দেশের জনপ্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের সদস্যরাও যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আট জাতির এই আঞ্চলিক সংস্থাটি খুব ভালোভাবে সক্রিয় আছে এবং আমি মনে করি দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এর মাধ্যমে আরো অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এই অঞ্চলের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।
দারিদ্র্যকে এই অঞ্চলের প্রধান শত্রু হিসেবে আবারো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কীভাবে দারিদ্র্য নির্মূল করতে পারি সেদিকেই আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত।’
যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে বাংলাদেশে বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে- এ বিষয়ে পাকিস্তানের সুশীল সমাজের এক প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘যাদেরকে আপনি বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক বলে সম্বোধন করছেন, তারা সকলেই ১৯৭১ সালে অপরাধ সংগঠনের সময়ে নবীন ছিলেন এবং তারাই এই গণহত্যা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছেন।
“তারা সে সময় জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, ঘর-বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে সম্পৃক্ত ছিলেন। এসব অপরাধেই তাদেরকে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার এবং দণ্ড প্রদান করা হয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশ থেকে তাদের বিনিয়োগ ফিরিয়ে নেয়ার সম্ভাবনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এক দেশ থেকে বিনিয়োগ অন্যত্র সরিয়ে নেয়াটা কোন অংশেই সহজ কাজ নয়।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলা সম্পর্কে তিনি বলেন, তার সরকার ৪শ’ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। এছাড়াও জলবায়ু সম্পর্কিত অভিযোজন মোকাবেলায় ১৩৪টি অ্যাকশন প্লান গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতের জন্য দায়ী উন্নত বিশ্বের দেশগুলোকে জলবায়ু ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর সাহায্যে এগিয়ে আসার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে পরিবেশের ওপর বিরূপ কোন প্রভাব পড়বে কি না-এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূষণকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার জন্যই এই কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে উন্নততর এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তার সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরামাণুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণেরও উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কয়লার ব্যবহারও বাড়াতে হবে।