জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় মাদুর-পলিথিন বিছিয়ে শুয়ে, বসে আছেন শতাধিক শিক্ষক। ৩ দিন ধরে না খাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে একেবারে দুর্বল হয়ে যাওয়া শিক্ষকরা শুয়ে আছেন প্রেসক্লাবের প্রাচীর ঘেঁষা ফুটপাথে।
আপাতত এই শিক্ষকদের টিকিয়ে রেখেছে স্ট্যান্ডে, বাঁশে, দড়িতে ঝুলিয়ে রাখা স্যালাইনের ব্যাগ, ২০টিরও বেশি শিরার স্যালাইন ঝুলছে সেখানে। এরপরও যারা আর পারছেন না তাদের ধরাধরি করে তোলা হচ্ছে পাশেই রাখা আঞ্জুমানে মফিদুলের দুটি ফ্রি অ্যাম্বুলেন্সে। সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৬-৭ জনকে এসব অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে দেখা যায়। সেখানে ইতোমধ্যে চিকিৎসাধীন আছেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক।
তবুও অনশনরত শিক্ষকরা রণে ভঙ্গ দিচ্ছেন না। অনশনরতদের সারি পৌঁছেছে সচিবালয়ের কাছাকাছি পর্যন্ত। নারী শিক্ষকরা কয়েকজন বসে আছেন সন্তানকে নিয়েই।
শিক্ষামন্ত্রী গতকাল আশ্বাস দিয়েছিলেন: শিক্ষকদের এমপিভুক্তির আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি হবে, সেজন্য একটু সময় লাগবে। এই জন্য নীতিমালা করা হবে। প্রসিডিউরের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
এই সময়ক্ষেপণ নিয়েই অনশনরত শিক্ষকদের আপত্তি। কবে নাগাদ তাদের এমপিওভুক্ত করা হবে সেই সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চান তারা, চান প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে এবিষয়ে কাঙ্ক্ষিত নির্দেশনা।
হাসপাতালে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের জন্য একটা বালিশ ও কম্বলের খোজ করছিলেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত হায়াত প্রধান।
এর ফাঁকে চ্যানেল আই অনলাইনকে এই শিক্ষক নেতা বলেন: আমরা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে আশ্বস্ত হইনি, হতাশ হয়েছি। তিনি ২০১১ সাল থেকেই এমন আশ্বাস দিয়ে আসছেন। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এমপিওভুক্তির সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবো। কবে আমাদের এমপিওভুক্ত করা হবে সেটা আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে বলতে হবে।
অনশনস্থলে থেমে থেমে বক্তব্য চলছে, দাবি আদায় করে বাড়ি ফেরার প্রেরণা দেয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি চলছে অসুস্থ শিক্ষকদের প্রতি পাশের সহকর্মীকে নজর রাখার নির্দেশনা দেয়া। অসুস্থদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে জানিয়ে বেশি অসুস্থবোধ করাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।