চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সারাদেশ থেকে যে সংবাদ আসছে, তাতে উদ্বিগ্ন: ড. কামাল

সন্ধ্যা ৬টায় সর্বশেষ বক্তব্য জানাবে ঐক্যফ্রন্ট

সারা দেশ থেকে যেসব সংবাদ আসছে তা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। আর ঐক্যফ্রন্টের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী ঢাকা -৭ এর ধানের শীষের মোস্তফা মোহসীন মন্টু এবং ঢাকা-৬ এর ধানের শীষের সুব্রত চৌধুরী নিজ নিজ আসনে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে চরম অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।

রোববার দুপুরে রাজধানীর আরামবাগের গণফোরাম কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, সারা দেশ থেকে যে তথ্য আসছে তাতে কোনো ভালো সংবাদ নেই। এখন পর্যন্ত ৪০-৫০টি ফোন কল পেয়েছি। তাদের একজনও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেনি। কোনো সুখবর নেই।

তিনি বলেন, এসব শুনে আমি খুব দুঃখ পাচ্ছি। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও এসেও জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে কষ্ট করতে হচ্ছে। জনগণ ক্ষমতার মালিক। কিন্তু এতো বছর পরে যদি হয় গণতন্ত্রের এই চেহারা তাহলে আর কি বলবো! স্বাধীনতা হয়েছিলো ভোটাধিকারের জন্য। বাংলাদেশের মানুষের যে ভোটের অধিকারের মূল্য তা আমরা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করি। এই ভোটাধিকারের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষকে মূল্য দিতে হয়েছে। ভোটাধিকার হলো জনগণ ক্ষমতার মালিকানা প্রতিষ্ঠার উপায়। কিন্তু আজকে যা দেখছি তাতে অত্যন্ত দুঃখ পাচ্ছি।

এই অবস্থায় উদ্বিগ্নের চেয়ে কঠিন কোনো কথা থাকলে তা বলতে হতো। গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

এই অবস্থায় আপনারা কি নির্বাচনের মাঠে আছেন এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, আমরা তো মাঠেই আছি। আমি সকালে ভোট দিয়েছি। তার মানে তো মাঠেই থাকা। তবে সন্ধ্যা ৬টার সময় সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানাবেন বলে জানান কামাল হোসেন।

এসময় ঢাকা ৭ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও গণফোরাম মহাসচিব নিজ এলাকার নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে চরম অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, আমি সকাল থেকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। আর এখন ভোট কেন্দ্র থেকে উঠে আসতে বাধ্য হয়ে আপনাদেরকে বলতে এলাম। আমাদের নেতাকর্মীদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি, পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। অনেক জায়গায় নারী পোলিং এজেন্টদের মেরে বের করে দিয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতা এসব করছে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মন্টু অবাক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমরা আগেই শুনেছিলাম যে, গত রাতে ৩৫ ভাগ ভোট তারা নৌকার পক্ষে মেরে নিবে। কিন্তু এটা বিশ্বাস করিনি। কোনো ভালো সভ্য সমাজে জনগণের ভোট, আমানত চুরি করবে নিবে তা কল্পনাতীত ছিলো আমাদের কাছে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে দেখলাম, গণতন্ত্রের জন্য যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি বলে প্রচার করে তারা এসব করেছে।

গণফোরামের এই নেতা আরো বলেন, ঢাকা ৭ আসনের সব কেন্দ্র থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। সব কেন্দ্র তারা দখলে নিয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় তারা এসব ‍করছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদেরকে সহযোগিতা করছে।

মোস্তফা মোহসীন মন্টু অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, এটি একটি বিভিষীকাময় নির্বাচন দেখছি। আমরা কিছুই করতে পারছি না। জনগণের কথা আমরা রাখতে পারিনি। আমরা অসহায়। জনগণের কাছে আমরা ক্ষমা চাই।।

সংবাদ সম্মেলনে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন ঢাকা ৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও গনফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, চরম ভয়াবহ নির্বাচন দেখছি। সব কেন্দ্র সকাল থেকে লাঠিয়াল বাহিনী দখল করে রেখেছে প্রশাসনের সহযোগিতায়। কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেয়নি। যারা ঢুকেছিলো তাদেরকে বের করে দিয়েছে। সারা দেশে যে ৬টি আসনে ইভিএম প্রয়োগের কথা, তার মধ্যে আমার আসন একটি। কিন্তু ইভিএমেও তারা ভোট মেরে দিচ্ছে। ভোটারেরা কাছে গেলেই বলছে, আপনারা এবার চলে যান, আমরা মেরে দিচ্ছি। দুঃখজনক ব্যাপর হলো, এই ইভিএম সেনাবাহিনীর দায়িত্বে হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা অসহায়।